পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৬৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫২
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

হইয়া এক সঙ্গে সাবধানতা অবলম্বন করে। শালিকের মধ্যেও এই রূপ ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। কোনও স্থানে হয়তো অনেকগুলি শালিক ইতস্ততঃ খাদ্য অন্বেষণ করিতেছে। সহসা একটি শালিক হ্রস্ব শব্দ করিয়া উড্ডীন হইল। শালিক পাখা মেলিবামাত্র তাহার ডানার শ্বেতবর্ণ অত্যন্ত স্পষ্ট হইয়া উঠে। বোধহয় এই শ্বেতবর্ণ নিশানা দেখিয়াই—তৎক্ষণাৎ আশে পাশে অবস্থিত সবকয়টি শালিক সামরিক শৃঙ্খলার সহিত ভূমি হইতে উখিত হয়। ছাতারের এরূপ কোনও বর্ণনিশান নাই। হয়তো ভাষার সাহায্যেই তাহারা সম্মিলিত গতি ও চলাফেরা নির্দ্ধারণ করে। ইহাদের দেহের বর্ণ নিরবচ্ছিন্ন নিষ্প্রভ ধূসর। তার মধ্যে শ্বেতবর্ণের চক্ষু দুটি সুস্পষ্ট দেখা যায়। নিষ্প্রভ সাদা চঞ্চু ও পদদ্বয় দেখিলে মনে হয় রক্তহীনতায় ভূগিতেছে।

 পাপিয়া দেখিলে ছাতারে পাখী খেপিয়া যায় এবং সকলে তারস্বরে চিৎকার করিতে করিতে তাহাকে তাড়া করে। কেন করে, সে কথা কোকিল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হইয়াছে। কাক যেমন কোকিলের চৌর্য্যবৃত্তি ধরিতে পারে না, অথচ কোকিল দেখিলেই তাড়া করে, ছাতারেও অনুরূপ কারণে পাপিয়া দেখিলে অকথ্য গালাগালি দিতে দিতে তার পশ্চাদ্ধাবন করে। পাপিয়া প্রহারের ভয়ে না হোক, বাক্যবাণের ধারাপাতে অতিষ্ঠ হইয়া পৃষ্ঠভঙ্গ দেয়।

 অনেক সময় এই নিরীহ পাখীর বাসা হইতে ইহাদের ডিম্ব ও শাবককে বায়স, হাঁড়িচাচা প্রভৃতি দুরাত্মারা অপহরণ করে। ঐ সব বলিষ্ঠ গুণ্ডাদের সঙ্গে এক পারিয়া উঠা যায় না; দল বাঁধিয়া থাকিলে উক্ত প্রকার আপদের হাত হইতে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। একাকী যেখানে সাহস দেখান যায়না, দলে ভারী থাকিলে অনেক দুর্ব্বলও সেখানে বীর হইয়া উঠে। ছাতারে পাখীও দলবদ্ধভাবে মাঝে মাঝে বেশ দুঃসাহস দেখাইয়া থাকে। ফ্রাঙ্ক ফিন্‌ সাহেব বলেন যে তাঁহার জনৈক