পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৮৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৭০
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

নীড় হইতে ডিম ও বাচ্চা জোগাড় করিয়া প্রাতরাশ করিতে ইহাদের দেখা যায়। তাহা হইলেও কাককে অন্য পাখীরা যতটা সন্দেহের চোখে দেখে, ইহাকে ততটা খারাপ মনে করে না। কিন্তু পক্ষিজগতের শান্তিরক্ষক বা চৌকিদার ফিঙ্গে ইহাকে দাগী সম্প্রদায়ভুক্তই মনে করে এবং হাঁড়ীচাচা দেখিলেই ফিঙ্গের মেজাজ খারাপ হইয় উঠে।

 ইহার শরীরে সাদা কালো রঙ্গের সমাবেশের জন্য এবং ইহা বৃক্ষবিহারী বলিয়া ইংরেজ ইহার নাম দিয়াছে “দি ট্রিপাই”। ইহাদের বাংলা সংজ্ঞাটি ইহারা গলার স্বরের জন্য লাভ করিয়াছে। মাটির হাঁড়ি একখানি খোলা দিয়া ঘর্ষণ করিলে যে শ্রুতিকটু শব্দ উৎপন্ন হয়, তাহার সহিত ইহাদের স্বরের সাদৃশ্য বশতঃই বোধহয় ইহা এই নাম, বা বদনাম, লাভ করিয়াছে। তবে সব সময়েই যে ঐরূপ কর্কশ স্বর ইহার কণ্ঠ হইতে বাহির হয়, তাহা নহে। প্রজনন ঋতুতে ইহাদের যে স্বর শুনিয়াছি তাহাকে শ্রুতিকটু বলা চলে না। বায়সের জ্ঞাতিভ্রাতা হইলেও তাহার মত অশ্রাব্য কর্কশ স্বর ইহাদের নহে। সাধারণতঃ যে স্বরটি ইহাদের কণ্ঠ হইতে নিঃসৃত হয় ইংরেজ লেখকরা তার পরিভাষা করিয়াছেন—“কক্‌-লী”। পূর্ব্ববঙ্গের গ্রাম্য অঞ্চলে উহার পরিভাষা “কুটুম-আলি” অর্থাৎ কুটুম্ব আসিলি। তাই ইহাকে “কুটুম” পাখীও বলে। এই পাখী বাড়িতে আসিয়া ঘন ঘন ডাকিলে বাড়ীতে কুটুম্ব আসে এইরূপ প্রবাদ পূর্ব্ববঙ্গে প্রচলিত আছে। ইহার কণ্ঠস্বর একটু উচ্চগ্রামের হইলেও বর্ষাকালে তাহা বেশ মিষ্টতা প্রাপ্ত হয়।

 গাছের শাখা হইতে শাখান্তরে উড়িয়াই ইহারা দিবসের বেশীর ভাগ সময় কাটায়। কীটভূক্ পাখী বলিয়া ভূমির উপরও মাঝে মাঝে আসিয়া বলে। কিন্তু ধরিত্রীপৃষ্ঠে ইহাদের গতিবিধি লালিত্য-