পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৯৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৭৬
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

স্থানে মাছধরা বাজ (ফিসিং ঈগল) আছে। এগুলি প্রকাণ্ড পাখী। সন্ধ্যাসকালে ও গভীর রাত্রে ইহাদের উচ্চ চিৎকারধ্বনি আকাশ প্রকম্পিত করিয়া তোলে এবং বালক ও শিশুদের অন্তরে আতঙ্কের সঞ্চার করে। যশোর ফরিদপুর অঞ্চলে ইহাকে বজরইলা বলে। সংস্কৃত সাহিত্যে ইহার নাম কুরর। ফিঙ্গে অনেক সময় এই অতিকায় পাখীকেও আক্রমণ করিয়া থাকে। ছোট ছোট পাখীর তে কথাই নাই। হয় তো কোন একটি ছোট পাখী একটি কীট আহরণ করিয়া খাইবার উপক্রম করিয়াছে; ফিঙ্গে তাহা দেখিতে পাওয়া মাত্র সশব্দে পাখীটিকে আক্রমণ করে। বেচারী পাখীটি প্রাণভয়ে মুখের গ্রাস ফেলিয়া পলায়ন করে এবং ফিঙ্গে অতিশয় অম্লানবদনে পরিত্যক্ত কীট উদরসাৎ করে। ইহাতে মোটেই সে বিবেকের দংশন বোধ করে না। পুলিশপুঙ্গবের মতই নিরীহ মানুষের উপর তন্বী করিতে ইহারা পটু। এবং এই সাদৃশ্যের জন্য অনেক স্থানে বিশেষতঃ দক্ষিণাত্যে ইহার নাম “কোতোয়াল” পাখী।

 যদিও অনেক সময় ছোট ছোট পাখীর মুখের গ্রাস কাড়িয়া আত্মসাৎ করা অভ্যাস, তবু অনেক দুবৃত্ত পাখীকে জব্দ করিয়া রাখে বলিয়া ছোট পাখীরা ইহার প্রতি কৃতজ্ঞ। সেইজন্য প্রজননকালে অনেক দুর্ব্বল পাখী ফিঙ্গে যে গাছে বাসা বাঁধে, সেই গাছেই কিংবা তাহার সন্নিকটস্থ বৃক্ষে নিজেদের নীড় বাঁধিয়া গৃহস্থালী পাতিয়া নিশ্চিন্ত বোধ করে। দু’একটা কীট পতঙ্গ কাড়িয়া খাইলেও, অন্য কোনওরূপ অত্যাচার ফিঙ্গে করে না। সুতরাং ফিঙ্গের প্রতিবেশীরূপে তাহারা নির্ব্বিঘ্নে ঘরকন্না করে। বিশেষ করিয়া দেখিবেন—হল্‌দে পাখী ফিঙ্গে যে গাছে বাসা বাঁধে সে গাছ ছাড়া অন্য গাছে নিজ নীড় স্থাপন করে না।

 ফিঙ্গে নানারকম স্বর কণ্ঠ হইতে বাহির করিতে পারে। তন্মধ্যে