পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৯৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ফিঙ্গে
৭৭

কতকগুলি স্বর বেশ সুমিষ্ট। বিশেষতঃ বর্ষাকালে ফিঙ্গের গলা বেশ মনোহর হয়। প্রতিভাবান ব্যক্তিদের মত ফিঙ্গে অল্প নিদ্রাতেই সন্তুষ্ট। অনেক রাত্রে সে শয়ন করে (কথাটা ঠিক হইল না—পাখীরা শয়ন করে না, তবে নিদ্রা যায়) এবং অতি প্রত্যুষেই নিবাসবৃক্ষ পরিত্যাগ করিয়া শিকার সন্ধানে বাহির হয়।

 ফিঙ্গে পাখীও স্নান করিতে খুব ভালবাসে। ঠিক মাছরাঙার মত ইহাও উড়িতে উড়িতে সহসা বেগে জলমধ্যে নিপতিত হইয়া ক্ষণপরেই উত্থিত হয়। ছোট ছোট মাছও সে এইরূপে ধরিয়া সে আহার করে। তবে কীটপতঙ্গই ইহার আহার্য্য। নানারূপ উড়ন্ত পতঙ্গের পশ্চাতে ধাবিত হইয়া ঘুরিয়া ডিগবাজী খাইয়া যে ভাবে ইহা শিকার ধরে তাহা দেখিবার বিষয়। ফিঙ্গে কদাচিৎ জমির উপর শিকার ধরিতে আসে, তবে একেবারে যে আসে না তাহা নহে। গবাদি পশুর পৃষ্ঠদেশে বসিয়া ফিঙ্গে শিকারের প্রতি লক্ষ্য রাখিতে ভালবাসে। গরু মহিষ যখন মাঠে ঘাস খায় তাদের বৃহৎ শরীরের পদতাড়নায় অনেক কীটপতঙ্গ ভূমি হইতে উত্থিত হয়, সেগুলি সহজলভ্য হয় বলিয়া সে এরূপ করে। শালিক, বক প্রভৃতি পাখী গরুর আশেপাশে পিছনে পিছনে হাঁটিয়া এই সব পতঙ্গাদি শিকার করে। ফিঙ্গে গোমহিষের পৃষ্ঠে আরোহণ করিয়া সে কার্য্য করে। সুদীর্ঘ পুচ্ছটির জন্য ভূমিতে স্বচ্ছন্দবিচরণ ইহার পক্ষে সম্ভব হয় না।

 ইহারা শস্য হানিকর কীটাদি ভোজন করে, শস্যের উপকারী পোকা আদৌ স্পর্শ করে না। শস্যের ক্ষতিকর পোকা এরা এত অধিক ধ্বংস করে যে ইহারা সত্যই মানুষের বন্ধু হিসাবে গণ্য হইবার উপযুক্ত। ইহাকে খাঁচায় ধরিয়া রাখিবার চেষ্টা বা হত্যা করা মানুষের স্বার্থের পক্ষে কল্যাণকর নহে।

 “কেশরাজ” ও “ভীমরাজ” নামে ফিঙ্গের দুটি জ্ঞাতি আছে। প্রথমটি