পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৯৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৮০
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

বলিয়া দোয়েলের মত সগোত্র-বিরোধী নহে। একই বাগানে অনেক জোড়া হল্‌দে পাখী নির্বিবাদে থাকে।

 পাখীদের মধ্যে টুনটুনি পাখী ও বাবুই পাখীর বাসারচনায় নিপুণতার জন্য খ্যাতি আছে। কিন্তু হল্‌দে পাখীর বাসা সচরাচর চোখে পড়ে না বলিয়া অনেকের ধারণা নাই যে ইহারাও নীড় নির্ম্মাণে কুশলী শিল্পী। উচ্চ বৃক্ষের উপর দিকে নাতিবৃহৎ দুইটি ডালের সংযোগস্থলে ইহারা দোদুল্যমান নীড় বাঁধে। ইহারা সত্যই নীড়টাকে ডালের সঙ্গে বাঁধিয়া রাখে। দীর্ঘ ফিতার মত বল্কল এ ডাল হইতে ও ডালে বহু পাক দিয়া জড়াইয়া বেশ সুদৃঢ় একটি দোলনা তৈয়ার করে। তৎপর তন্মধ্যে আস্তরণ দিয়া বেশ একটি ঝুলন্ত গোলাকার বাটী প্রস্তুত করিয়া লয়।

 ফিঙ্গে প্রবন্ধে উল্লেখ করিয়াছি যে ফিঙ্গে যে গাছে বাসা নির্ম্মাণ করে ইহারা সেই গাছেই বাসা নির্ম্মাণ করিবে। ক্বচিৎ পার্শ্বস্থ বৃক্ষ এজন্য নির্ব্বাচিত করে। হল্‌দে পাখী অত্যন্ত নিরীহ পাখী। ফিঙ্গে অত্যন্ত জবরদস্ত, তাহার নীড়বৃক্ষের সান্নিধ্যে কোনও প্রকার আমিষভোজী চৌর্য্যপরায়ণ পাখীকে সে আসিতে দেয় না। উহার সন্নিকটে বাসা রচনা করিয়া হল্‌দে পাখী নিজেকে নিরাপদ মনে করে। এপ্রিল, মে ও জুনমাসেই লক্ষ্য করিলে ইহাদের নীড় দেখা যাইবে। এই নীড়মধ্যে ২টা হইতে ৪টা পর্য্যন্ত ডিম ইহারা এক একবার প্রসব করে। ডিমগুলি হয় ধবধবে সাদা, বহু লাল ছিটা সমন্বিত। কখনও কখনও লাল দাগগুলি থাকে না। তার পরিবর্ত্তে সমস্ত ডিমটার গায়ে ঈষৎ গোলাপী আভা থাকে।

 আমাদের পল্লীঅঞ্চলে দুইরকমের হল্‌দে পখী সাধারণতঃ দেখা যায়। ইহার দেহের কৃষ্ণ ও পীতবর্ণের সংস্থানের দ্বারাই দুইটি পাখীর প্রভেদ সূচিত হয়। একটির শরীরে পীতবর্ণেরই আধিক্য। কালো রং থাকে