পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৯৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
হুপো

 ঘন পল্লববীথির মধ্যে আত্মগোপন করিয়া বেড়ায় না, অথচ হল্‌দে পাখীর মতই বর্ণসুষমাসম্পন্ন আর একটি পাখী আমাদের দেশে আছে। ইহার ইংরাজী নাম হুপো এবং হিন্দী নাম “হুদ্‌ হুদ্‌”। শব্দটি আরবী ভাষা হইতে আসিয়াছে কেন না প্রাচীন আরবে এ পাখীর অত্যন্ত কদর ছিল। রাণী শেবা যখন রাজা সলোমলের মনোহরণ করিতে গিয়াছিলেন, তখন তাঁর উপঢৌকনের মধ্যে একটি “হুদ হুদ” পাখীই শ্রেষ্ঠ উপঢৌকন হিসাবে সলোমন কর্ত্তৃক বিবেচিত হইয়াছিল। ইহার বাংলা নাম কি আমি জানিনা। উত্তর, পূর্ব্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ বঙ্গে সর্ব্বত্রই ইহাকে দেখিয়াছি। সর্ব্বত্রই ইহার নাম স্থানীয় লোকের কাছে জিজ্ঞাসা করিয়াছি। বেশীর ভাগ লোকই ইহাকে কাঠঠোকরা বলিয়া চালাইতে চেষ্টা করিয়াছে। কেহ কেহ কাদাখোঁচা বলিয়াছে; তাহার কারণ এই যে ইহার চঞ্চুটি দীর্ঘ। কিন্তু এই চঞ্চু ঈষৎ বক্র এবং সূচাল; কাঠ ঠুকরাইবার মত মোটেই সুদৃঢ় নহে। ইহাকে কাঠে ঠোকরাইতে দেখাও যায় না। মাটি খুঁচিয়া বেড়ানই ইহার অভ্যাস। আমাদের পর্য্যবেক্ষণ শক্তি যে কিরূপ ক্ষীণ হইয়া পড়িয়াছে তাহা আমি অনেক স্থানে পাখীর নাম জানিবার চেষ্টার সময় উপলব্ধি করি। যাই হোক, হিন্দী নামটি একটু শ্রুতিকটু বলিয়া মনে হয়। তাই ইংরেজী নামটিই চালাইবার চেষ্টা করিলাম।

 বাংলার সর্ব্বত্রই ইহাকে পাওয়া যায় সুতরাং ইহাকে চিনিয়া লইতে কাহাকেও বেগ পাইতে হইবে না। জনবিরল পল্লীপ্রান্তেও ইহাকে পাওয়া যায়, আবার জনবহুল নগর মধ্যেও ইহাদের অবাধ গতিবিধি আছে। ইহার মস্তক, কণ্ঠ, স্কন্ধ, বক্ষ ও নিম্নদেশ ফিকে