পাতা:বাঙ্গ্‌লার বেগম - ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঙ্গ্‌লার বেগম

বেগমের বিবাহ হয়।[১] নবাব নওয়াজিসকে ঢাকার, সৈয়দ অহম্মদকে প্রথমে উড়িষ্যার, পরে হুগলীর, অবশেষে পূর্ণিয়ার এবং জৈনুদ্দীনকে পাটনা বা আজিমাবাদের শাসনভার প্রদান করিয়াছিলেন। নওয়াজিসের কোন সন্তানাদি ছিল না, সৈয়দ অহম্মদের এক পুত্র—সওকজঙ্গ এবং জৈনুদ্দীনের তিন পুত্র সিরাজুদ্দৌলা (মিরজা মহম্মদ), ফজ্‌ল্‌ কুলি খাঁ (ইক্রামুদ্দৌলা) ও মিরজা-মেহ্‌দি।

 আলিবর্দ্দী খাঁ আজিমাবাদের শাসনকার্য্যে নিযুক্ত হইবার অব্যবহিত পূর্ব্বে তাঁহার কনিষ্ঠা কন্যা আমিনার একটী পুত্র সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। এই পুত্রের জন্মের অল্পদিনের মধ্যেই আলিবর্দ্দীর ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় বলিয়া, তিনি দৌহিত্রকে দত্তক পুত্র রূপে গ্রহণ করেন এবং আপনার নামানুসারে তাহাকে ‘মিরজা মহম্মদ’ এই নামে অভিহিত করেন। এই মিরজা মহম্মদই ইতিহাস-বিখ্যাত সিরাজুদ্দৌলা।

 ১৭৫৫ খৃঃ অব্দে ডিসেম্বর মাসে নওয়াজিস মহম্মদের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তাঁহার বিপুল সম্পত্তির কোন উত্তরাধিকারী না থাকায় সমস্ত সম্পত্তি তাঁহার স্ত্রী ঘসিটী বেগম ও দেওয়ান রাজবল্লভের করতলগত হয়। আলিবর্দ্দী খাঁ মৃত্যুকালে (১৭৫২ খৃঃ) অন্য দৌহিত্রের উত্তরাধিকারিত্বের দাবী উপেক্ষা করিয়া, সিরাজকে প্রকাশ্যভাবে তাঁহার উত্তরাধিকারী বলিয়া নির্দ্দেশ করিয়া যান। আলিবর্দ্দীর মৃত্যুর পরে সিরাজ রাজবল্লভকে ধরিয়া আনিয়া তাহার নিকট হইতে তাহার প্রভুর সমস্ত ধন-সম্পত্তি কোথায় আছে, তাহার একটা সন্তোষজনক হিসাব চাহেন; কিন্তু নওয়াজিসের নিতান্ত বিশ্বস্ত ভৃত্য রাজবল্লভ সিরাজের নিকট ধন-রত্নের কথা সযত্নে গােপন রাখেন। তাঁহার ভয়, ইহা প্রকাশ

১৬


  1. Braidley Birt তাঁহার “Romance of an Eastern Capital” পুস্তকের ২১৪ পৃষ্ঠায় ভ্রমক্রমে সৈয়দ অহম্মদকে আমিনার স্বামী বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন।