পাতা:বাঙ্গ্‌লার বেগম - ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঙ্গ্‌লার বেগম

জং তাঁহার প্রমাণে সন্তুষ্ট হইয়াই হউক, অথবা অপ্রতিহত-শক্তিসম্পন্ন মণিবেগমকে বশে রাখিবার জন্যই হউক, এ সম্বন্ধে কোনরূপ উচ্চবাচ্য করেন নাই।

 মােবারকের মৃত্যুর পর তাঁহার জ্যেষ্ঠপুত্র বাবর আলি খাঁ বাহাদুর ১৭৯৩ খৃঃ অব্দের ২৪শে সেপ্টেম্বর তারিখে গভর্ণর জেনারেলের সম্মতিক্রমে নিজামতি প্রাপ্ত হন। তিনি ১৮১০ খৃঃ অব্দের ২৮ শে এপ্রেল তারিখে মৃত্যুমুখে পতিত হ’ন।

 বাবর জঙ্গির মৃত্যুর পর কাহাকে মসনদে বসান হইবে, এই বিষয় লইয়া অনেক বাদানুবাদ উত্থাপিত হইয়াছিল। মণিবেগম, রাজসভাষদবর্গ ও কয়েকজন সন্ত্রান্ত লােক মােবারকের দ্বিতীয় পুত্র কাশিম খাঁকে মসনদে বসাইবার জন্য মত দিলেন; কিন্তু রেসিডেণ্ট সাহেব এই প্রস্তাবে সম্মত হইলেন না। তিনি বলিলেন, বাবরজঙ্গের পুত্রকে মসনদে না বসাইয়া, তাঁহার খুল্লতাতকে নিজামতি দিলে, ন্যায়ের মর্য্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকিবে না। তিনি আরও বলিলেন, মহম্মদীয় ব্যবহার-শাস্ত্রানুসারে পিতার সমস্ত সম্পত্তি পুত্রেরই প্রাপ্য। ন্যায় ও আইনের অবমাননা করিতে আমি অসমর্থ। দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রেসিডেণ্ট সাহেবের যুক্তির সারবত্ত্বা দেখিয়া, অগত্যা মণিবেগম তাঁহার প্রস্তাবে সম্মত হইলেন।

 ১৮১০ খৃঃ অব্দের ৫ই জুন আলিজা মসনদে আরূঢ় হইলেন। এইরূপে ১১ বৎসর ছয় মাস কাল রাজ্য চালাইবার পর ১৮২১ খৃঃ অব্দের ৬ই আগষ্ট রবিবার ৩টার সময় তাঁহার মৃত্যু হয়।

 ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী মণিবেগমকে অতিশয় সম্মানের চক্ষে দেখিতেন। ১৮১৩ খৃঃ অব্দে মণিবেগমের মৃত্যু হইলে,[১] তাহার সম্মানার্থ তাঁহার বয়ঃ-


  1. শ্রদ্ধাস্পদ শ্রীযুক্ত নিখিলনাথ রায়, বি-এল মহাশয় তাঁহার মুর্শিদাবাদ কাহিনীর ২৬২ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, ১৮০২ খৃঃ অব্দে মণিবেগমের মৃত্যু হইয়াছিল; কিন্তু ওয়াল্‌শ

৪২