পাতা:বাঙ্গ্‌লার বেগম - ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঙ্গ্‌লার বেগম

সঙ্গে লইয়া পিত্রালয়েই জীবনের অবশিষ্ট দিন গুলি শান্তিতে যাপন করিতে মনস্থ করিলেন।

 সুজার উড়িষ্যায় অবস্থানকালে মীরজামহম্মদ নামক এক ব্যক্তি তাঁহার নিকট উপস্থিত হ’ন। মীরজা সুজার কোন আত্মীয়াকে বিবাহ করিয়াছিলেন। এই বিবাহে দুইটী পুত্রের জন্ম হয়। জ্যেষ্ঠ হাজি অহম্মদ ও কনিষ্ঠ আলিবর্দ্দী। মীরজা মহম্মদ দারিদ্র্যের নিষ্পেষণে দিল্লী হইতে পত্নীকে লইয়া সুজার নিকট ভাগ্যপরীক্ষার্থ উপস্থিত হ’ন। সুজাও বিশ্বাসী মহম্মদকে আপনার অধীনে সরকারী কার্য্যে নিযুক্ত করেন। ইহার পর ঘটনাচক্রচালিত হইয়া, আলিবর্দ্দী খাঁও উড়িষ্যার নবাব-দরবারে উপস্থিত হইলেন। তিনি অল্পদিনের মধ্যেই সাহস ও বুদ্ধিবলে সুজার একান্ত প্রিয়পাত্র হইয়া উঠিলেন। দিন দিন আলিবর্দ্দীর উত্তরোত্তর উন্নতি হইতে লাগিল। অবশেষে তিনি তাঁহার ভ্রাতা হাজি অহম্মদকে সাজহানাবাদ হইতে সপরিবারে উড়িষ্যায় লইয়া আসিলেন। উভয় ভ্রাতাই যুদ্ধবিগ্রহাদি কার্য্যে ও রাজ্য শাসনকার্য্যে বিচক্ষণ ছিলেন। ইহাদের বুদ্ধিকৌশলে রাজ্যমধ্যে সুজার শাসনশক্তি সুদৃঢ় হইয়াছিল। আলিবর্দী খাঁ স্বীয় প্রতিভাবলে, সুজার অধীনে সর্বোচ্চ রাজপদ লাভ করিলেন।

 মুর্শিদকুলি নিজের মৃত্যু নিকট দেখিয়া ও জামাতা সুজার প্রতি পূর্ব্ব হইতে বিরূপ থাকায়, স্বীয় দৌহিত্র সরফরাজকে বাঙ্গালার নিজামতি প্রদানের জন্য অভিলাষ প্রকাশ করেন। এই কথা সুজার কর্ণগোচর হইবামাত্র, তিনি আলিবর্দ্দী ও হাজি অহম্মদের সহিত পরামর্শ করিয়া, বাঙ্গালা ও উড়িষ্যার নিজামতি প্রাপ্তির জন্য দিল্লীর বাদসাহের নিকট নানাবিধ উপঢৌকন পাঠান।

৬০