পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ श् ] সন্ধ্যার শরীরটা কিছুদিন হইতে তেমন ভাল চলিতেছিল না । প্রায়ই জ্বর হইত এবং পিতার চিকিৎসাধীনে থাকিয়া থাকিয়া সে যেন ধীরে ধীরে মন্দের দিকেই পথ করিতেছিল। মাবিপিন ডাক্তারকে ডাকিয়া পাঠাবেন বলিয়া প্রত্যহ ভয় দেখাইতেছিলেন এবং ইহা লইয়া মাতায় কন্যায় একটু-ন-একটু কলহ প্রায় প্রতিদিনই ঘটিতেছিল। আজ সায়াহ্নবেলায় সন্ধ্যা সম্মুখের বারান্দায় একটি খুটি ঠেস্ দিয়া বসিয়া মাতৃ প্রদত্ত সাগুর বাটিটা চোখ বুজিয়া নিঃশেষ করিল এবং তাড়াতাড়ি একটা পান মুখে পুরিয়া দিয়া কোনমতে সেগুলার উৰ্দ্ধগতি নিবারণ করিল। এই খাদ্যবস্তুটার প্রতি তার অতিশয় বিতৃষ্ণ ছিল ; কিন্তু তথাপি না খাওয়া এবং কম খাওয়৷ লইয়া অার তাহার কথা স্থষ্টি করিতে ইচ্ছা হইল না। কোথাও না কোথাও হইতে ম যে তাহার প্রতি দৃষ্টি রাখিয়াছেন, ইহা সে নিশ্চয় জানিত। ইতিপূৰ্ব্বে বোধ হয় সে একখানা বই পড়িতেছিল—তাহার খোলা পাতাটা উপুড় করিয়া কোলের উপর রাখা ছিল, সেইখানা পুনরায় হাতে তুলিয়া দৃষ্টি নিবদ্ধ করিবার উদ্যোগ করিতেই শুনিতে পাইল প্রাঙ্গণের একপ্রাস্ত হইতে ডাক আসিল, খুড়ীমা, কই গো ? যে বাড়ী ঢুকিয়াছিল সে অরুণ। তাহার জাম-কাপড় এবং পরিশ্রাস্ত চেহারা দেখিলেই বুঝা যায় সে এইমাত্র অক্ষত্ৰ হইতে আসিতেছে । মুহূর্বের জন্য সন্ধ্যার পাণ্ডুর মলিন মুখের উপর একটা রক্তিমাভ দেখা দিয়া গেল। সে চোখ তুলিয়া হাসিমুখে জিজ্ঞাসা করিল, তুমি বুঝি কোলকাতা থেকে আসচে। অরুণদা ?