পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দুই সন্ধ্যার অন্ধকার ধীরে ধীরে গাঢ় হইয়। আসিতেছিল, কিন্তু তখনও আলো জ্বালা হয় নাই। অরুণ তাহার পড়িবার ঘরের মধ্যে টেবিলের উপর দুই পা তুলিয়া দিয়া, কড়িকাঠের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করিয়া স্থির হইয়া বসিয়াছিল। তাহার ক্রোড়ের উপর বই খোলা, কিন্তু একটু মনোযোগ করিলেই দেখা যাইত যে, এ কেবল সন্ধ্যার অজুহাতেই পড়া বন্ধ হয় নাই, বরঞ্চ আলো যখন যথেষ্ট ছিল, তখনও ঐ বই ওখানে অমনি করিয়াই পড়িয়াছিল। বস্তুতঃ সেইদিন হইতে সে কাজেও যায় নাই, বাড়ীর বাহির পর্য্যস্ত হয় নাই । এই কয়ট দিন তাহার কেবল একটা কথাই বার বার মনে পড়িয়াছে যে, একজনের কাছে সে একেবারে অস্পৃশ্য হইয়া গেছে। ঘৃণা এবং অশুচিত। এতদূরে গিয়াছে যে, তাহাকে ছু ইয়া ফেলিলেও একজনের মুখের পান ফেলিয়া দিবার প্রয়োজন হয় । সহসা তাহার চিন্তা বাধা পাইল । দ্বারের কাছে একটা শব্দ শুনিয়া সে চোখ নামাইয়া ঠাহর করিয়া দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিল, কে ওখানে ? আমি সন্ধ্য,—বলিয়া সাড়া দিয়া সন্ধ্যা দরজা খুলিয়া চৌকাঠ ধরিয়া দাড়াইল । অরুণ ব্যস্ত হইয়া পা নামাইয়া উঠিয়া দাড়াইল এবং একান্ত বিস্ময়ের কণ্ঠে প্রশ্ন করিল, তুমি এখানে ? এমন সময়ে যে ? ঘরে এসে ব’সো ? - সন্ধ্যা কহিল, আমার বসবার সময় নেই। আমি পুকুরে গা ধুতে