পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

చి বামুনের মেয়ে থেকে সত্যি-সত্যিই আসবেন লিখেচেন। তিনি ত কখনো মিথ্য। বলেন না মা—এবার বোধ হয় তার দয়া হয়েচে । জগদ্ধাত্রী উৎসুক হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, মার চিঠি । কবে আসবেন লিখেচেন ? তাহার কাশীবাসিনী সন্ন্যাসিনা শ্বশ্রী কাশী ছাড়িয়া একটা দিনের জন্যও কোথাও যাইতে চাহিতেন না । এবার জগদ্ধাত্রী তাহাকে অনেক করিয়া লিখিয়াছিলেন যে, তাহার একমাত্র পৌত্রীর বিবাহে র্তাহাকে কেবল উপস্থিত হওয়া নয়, কন্যা দান করিতে হইবে । শাশুড়ী দান করিতে কোনমতেই সম্মত হন নাই, কিন্তু যথাসময়ে উপস্থিত হইবেন বলিয়া জবাব দিয়াছেন। সন্ধ্যা নিজের বিবাহের কথায় লজ্জা পাইয়া বলিল, তোমার চিঠির জবাব তুমিই পড় নাম । বলিয়া কাগজখানি মায়ের কাছে রাখিয়া দিয়া হঠাৎ ব্যগ্র হইয়া কহিল, ও মা, তুমি যে এখন পৰ্য্যস্ত ভিজে কাপড়েই রয়েচো—যাই তোমার শুকনে কাপড়খানা দৌড়ে নিয়ে আসি । এই বলিয়া সে দ্রুতবেগে প্রস্থান করিল। জগদ্ধাত্রী চিঠিখানি মাথায় ঠেকাইয়া বলিলেন, বে বলে এতকাল পরে কি সত্যিই দয়া হ’লে মা ! বলিয়া তিনিও উঠিয়া ধীরে ধীরে ঠাকুরঘরের দিকে যাইবার উদ্যোগ করিতেছিলেন—অকস্মাৎ তাহার স্বামী অত্যন্ত সোরগোল করিয়া বাড়ী ঢুকিলেন। তিনি বলিতেছিলেন—দুটো দিন যাইনি, ছটে দিন দেখিনি, অমনি হাইপোকণ্ডিয়া ডেভেলপ করেচে! • 4 স্বামীর সহিত জগদ্ধাত্রীর বড় একটা কথা হইত না, কিন্তু তাহার এই অতি-ব্যস্ততা এবং বিশেষ করিয়া বেলা বারোটার পূৰ্ব্বে আজ অকস্মাৎ প্রত্যাবৰ্ত্তন দেখিয়া তিনি মনে মনে কিছু বিস্মিত হইলেন। মুখ তুলিয়া শ্রান্তকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিলেন, কার কি হয়েচে ?