পাতা:বিচিত্র গল্প দ্বিতীয় ভাগ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একটি ক্ষুদ্র পুরাতন গল্প
১০৯

অনুচরবর্গ সম্পূর্ণ বিশ্বাস করে না। কিন্তু অনুগ্রহ নিগ্রহের দিকে তাকাইলে সকল সময় কাজ করা হইয়া উঠে না। নিরপেক্ষ হইয়া কাজ না করিলে কাজের গৌরব আর থাকে না।

 অতএব, যদি কিছু শুনিতে ইচ্ছা করিয়া আসিয়া থাক ত কিছু শুনাইব। শ্রান্তি মানিব না এবং উৎসাহেরও প্রত্যাশা করিব না।

 আজ কিন্তু অতি ক্ষুদ্র এবং পৃথিবীর অত্যন্ত পুরাতন একটি গল্প মনে পড়িতেছে; মনোহর না হইলেও সংক্ষেপবশতঃ শুনিতে ধৈর্য্যচ্যুতি না হইবার সম্ভাবনা।

 পৃথিবীতে একটি মহানদীর তীরে একটি মহারণ্য ছিল। সেই অরণ্যে এবং সেই নদীতীরে একটি কাঠঠোকরা এবং একটি কাদাখোঁচা পক্ষী বাস করিত।

 ধরাতলে কীট যখন সুলভ ছিল তখন ক্ষুধা নিবৃত্তিপুর্ব্বক সন্তুষ্টচিত্তে উভয়ে ধরাধামের যশঃকীর্ত্তন করিয়া পুষ্ট কলেবরে বিচরণ করিত।

 কালক্রমে দৈবযোগে পৃথিবীতে কীট দুষ্প্রাপ্য হইয়া উঠিল।

 তখন নদীতীরস্থ কাদাখোঁচা শাখাসীন কাঠঠোকরাকে কহিল, “ভাই কাঠঠোকরা, বাহির হইতে অনেকের নিকট এই পৃথিবী নবীন শ্যামল সুন্দর বলিয়া মনে হয় কিন্তু আমি বলিতেছি ইহা আদ্যোপান্ত জীর্ণ।”

 শাখাসীন কাঠঠোকরা নদীতটস্থ কাদাখোঁচাকে কহিল, “ভাই কাদাখোঁচা, অনেকে এই অরণ্যকে সতেজ শোভন

 ১০