পাতা:বিচিত্র গল্প দ্বিতীয় ভাগ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিচিত্র গল্প।

 কিন্তু আমিনার মুখে কি ব্যবহারে তাহার লক্ষণ কিছুই প্রকাশ পায় না। বরং অনেক বিষয়ে এখানকার মানুষের প্রতি তাহার কিছু অন্যায় পক্ষপাত দেখা যায়।

 জুলিখা যথাসাধ্য রাগ প্রকাশ করিয়া কহিল “বাস্তবিক, আমিনা তোর ব্যবহারে আমি আশ্চর্য্য হইয়া গিয়াছি। একজন বাহিরের যুবক আসিয়া তোকে স্পর্শ করিতে পারে এত বড় তাহার সাহস!”

 আমিনা দিদির সহিত যোগ দিয়া কহিল “দেখ্‌দেখি বোন্। যদি কোন বাদশাহ কিম্বা নবাবের ছেলে এমন ব্যবহার করিত তবে তাহাকে অপমান করিয়া দূর করিয়া দিতাম।”

 জুলিখার ভিতরের হাসি আর বাধা মানিল না—হাসিয়া উঠিয়া কহিল “সত্য করিয়া বল্ দেখি আমিনা তুই যে বলিতেছিলি পৃথিবীটা তোর বড় ভাল লাগিতেছে, সে কি ঐ বর্ব্বর যুবকটার জন্য?”

 আমিনা কহিল “তা সত্য কথা বলি দিদি, ও আমার অনেক উপকার করে। ফুলটা ফলটা পাড়িয়া দেয়, শীকার করিয়া আনে, একটা কিছু কাজ করিতে ডাকিলে ছুটিয়া আসে। অনেকবার মনে করি, উহাকে শাসন করিব। কিন্তু সে চেষ্টা বৃথা। যদি খুব চোখ রাঙাইয়া বলি, দালিয়া, তোমার প্রতি আমি ভারি অসন্তুষ্ট হইয়াছি—দালিয়া মুখের দিকে চাহিয়া পরম কৌতুকে নিঃশব্দে হাসিতে থাকে। এদের দেশে পরিহাস বোধ করি এই রকম; দু’ঘা মারিলে