ভারি খুসি হইয়া উঠে তাহাও পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছি। ঐ দেখ না, ঘরে পূরিয়া রাখিয়াছি বড় আনন্দে আছে, দ্বার খুলিলেই দেখিতে পাইব, মুখ চক্ষু লাল করিয়া মনের সুখে আগুনে ফুঁ দিতেছে। ইহাকে লইয়া কি করি বল ত বোন! আমি ত আর পারিয়া উঠি না।”
জুলিখা কহিল “আমি চেষ্টা দেখিতে পারি।”
আমিনা হাসিয়া মিনতি করিয়া বলিল “তোর দুটি পায়ে পড়ি বোন্! ওকে আর তুই কিছু বলিস্ না।”
এমন করিয়া বলিল যেন যুবকটি আমিনার একটি বড় সাধের পোষা হরিণ, এখনো তাহার বন্য স্বভাব দূর হয় নাই—পাছে অন্য কোন মানুষ দেখিলে ভয় পাইয়া নিরুদ্দেশ হয় এমন আশঙ্কা আছে।
এমন সময় ধীবর আসিয়া কহিল “আজ দালিয়া আসে নাই তিন্নি?”
“আসিয়াছে।”
“কোথায় গেল?”
“সে বড় উপদ্রব করিতেছিল তাই তাহাকে ঐ ঘরে পূরিয়া রাখিয়াছি।”
বৃদ্ধ কিছু চিন্তান্বিত হইয়া কহিল “যদি বিরক্ত করে সহিয়া থাকিস্। অল্প বয়সে অমন সকলেই দুরন্ত হইয়া থাকে। বেশি শাসন করিস্ না। দালিয়া কাল এক থলু দিয়া আমার কাছে তিনটি মাছ লইয়াছিল।” (থলু অর্থে স্বর্ণ মুদ্রা।)