পাতা:বিচিত্র গল্প দ্বিতীয় ভাগ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবিত ও মৃত।
২৭

 কাদম্বিনী ভদ্রলােকটিকে কহিল, “নিশিন্দাপুরে শ্রীপতিচরণ বাবুর বাড়ি যাইব।”

 পথিক কলিকাতায় যাইতেছিলেন; নিশিন্দাপুর যদিও নিকটবর্ত্তী নহে তথাপি তাঁহার গম্য পথেই পড়ে। তিনি স্বয়ং বন্দোবস্ত করিয়া কাদম্বিনীকে শ্রীপতিচরণ বাবুর বাড়ি পৌঁছাইয়া দিলেন।

 দুই সইয়ে মিলন হইল। প্রথমে চিনিতে একটু বিলম্ব হইয়াছিল, তাহার পরে বাল্যসাদৃশ্য উভয়ের চক্ষে ক্রমশই পরিস্ফুট হইয়া উঠিল।

 যােগমায়া কহিল “ওমা, আমার কি ভাগ্য! তােমার যে দর্শন পাইব এমন ত আমার মনেই ছিল না। কিন্তু ভাই, তুমি কি করিয়া আসিলে! তােমার শ্বশুরবাড়ির লােকেরা যে তােমাকে ছাড়িয়া দিল!”

 কাদম্বিনী চুপ করিয়া রহিল—অবশেষে কহিল “ভাই, শ্বশুরবাড়ির কথা আমাকে জিজ্ঞাসা করিও না! আমাকে দাসীর মত বাড়ির এক প্রান্তে স্থান দিয়ো, আমি তােমাদের কাজ করিয়া দিব।”

 যােগমায়া কহিল “ওমা সে কি কথা! দাসীর মত থাকিবে কেন! তুমি আমার সই, তুমি আমার”―ইত্যাদি।

 এমন সময় শ্রীপতি ঘরে প্রবেশ করিল। কাদম্বিনী খানিকক্ষণ তাহার মুখের দিকে তাকাইয়া ধীরে ধীরে ঘর