নিজের কর্ম্মপটুতার প্রতি স্ত্রীর এইরূপ বিশ্বাসের অভাবে শ্রীপতি অত্যন্ত ক্ষুণ্ণ হইয়া বিস্তারিত ভাবে সমস্ত প্রমাণ প্রয়ােগ করিতে লাগিলেন—কিন্তু কোন ফল হইল না। উভয়পক্ষে হাঁ না করিতে করিতে রাত্রি দ্বিপ্রহর হইয়া গেল।
যদিও কাদম্বিনীকে এই দণ্ডেই গৃহ হইতে বহিস্কৃত করিয়া দেওয়া সম্বন্ধে স্বামী স্ত্রী কাহারাে মতভেদ ছিল না— কারণ শ্রীপতির বিশ্বাস তাঁহার অতিথি ছদ্মপরিচয়ে তাঁহার স্ত্রীকে এতদিন প্রতারণা করিয়াছে এবং যােগমায়ার বিশ্বাস সে কুলত্যাগিনী—তথাপি উপস্থিত তর্কটা সম্বন্ধে উভয়ের কেহই হার মানিতে চাহেন না।
উভয়ের কণ্ঠস্বর ক্রমেই উচ্চ হইয়া উঠিতে লাগিল, ভুলিয়া গেলেন পাশের ঘরেই কাদম্বিনী শুইয়া আছে।
একজন বলেন “ভাল বিপদেই পড়া গেল। আমি নিজের কানে শুনিয়া আসিলাম!”
আর একজন দৃঢ়স্বরে বলেন “সে কথা বলিলে মানিব কেন, আমি নিজের চক্ষে দেখিতেছি!”
অবশেষে যােগমায়া জিজ্ঞাসা করিলেন “আচ্ছা কাদম্বিনী কবে মরিল বল দেখি।”
ভাবিলেন, কাদম্বিনীর কোন একটা চিঠির তারিখের সহিত অনৈক্য বাহির করিয়া শ্রীপতির ভ্রম সপ্রমাণ করিয়া দিবেন।