পাতা:বিচিত্র গল্প দ্বিতীয় ভাগ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
বিচিত্র গল্প।

তাহার আধ্যাত্মিক উন্নতির উদ্দেশে মাঝে মাঝে শারীরিক শাসন করিতেও ত্রুটি করে না। যে দিন হৈমবতীর বালিশের নীচে হইতে “কৃষ্ণকান্তের উইল” বাহির হয় সে দিন উক্ত লঘুপ্রকৃতি যুবতীকে সমস্ত রাত্রি অশ্রুপাত করাইয়া তবে ফকির ক্ষান্ত হন। একে নভেল পাঠ তাহাতে আবার পতিদেবকে প্রতারণা! যাহা হউক্ অবিশ্রাম আদেশ অনুদেশ উপদেশ ধর্ম্মনীতি এবং দণ্ডনীতির দ্বারা অবশেষে হৈমবতীর মুখের হাসি, মনের সুখ এবং যৌবনের আবেগ একেবারে নিষ্কর্ষণ করিয়া ফেলিতে স্বামীদেবতা সম্পূর্ণ কৃতকার্য্য হইয়াছিলেন।

 কিন্তু, অনাসক্ত লোকের পক্ষে সংসারে বিস্তর বিঘ্ন। পরে পরে ফকিরের এক ছেলে এক মেয়ে জন্মগ্রহণ করিয়া সংসারবন্ধন বাড়িয়া গেল। পিতার তাড়নায় এতবড় গম্ভীরপ্রকৃতি ফকিরকেও আপিসে আপিসে কর্ম্মের উমেদারীতে বাহির হইতে হইল, কিন্তু কর্ম্ম জুটিবার কোন সম্ভাবনা দেখা গেল না।

 তখন তিনি মনে করিলেন বুদ্ধদেবের মত আমি সংসার ত্যাগ করিব। এই ভাবিয়া একদিন গভীর রাত্রে ঘর ছাড়িয়া বাহির হইয়া গেলেন।

মধ্যে আর একটি ইতিহাস বলা আবশ্যক।

 নবগ্রামবাসী যষ্ঠিচরণের এক ছেলে। নাম মাখনলাল।