পাতা:বিচিত্র গল্প দ্বিতীয় ভাগ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মুক্তির উপায়।
৪৭

কিন্তু নিরুপায়ে সহ্য করিতে হইল। একজন গায়ের উপর আসিয়া পড়িয়া জিজ্ঞাসা করিল “ওরে মাখন, তুই কুচকুচে কালো ছিলি রংটা এমন ফর্সা করলি কি করে?”

 ফকির উত্তর দিল “যোগ অভ্যাস করে।”

 সকলেই বলিল “যোগের কি আশ্চর্য্য প্রভাব!”

 একজন উত্তর করিল “আশ্চর্য্য আর কি! শাস্ত্রে আছে, ভীম যখন হনুমানের লেজ ধরে তুল‍্তে গেলেন কিছুতেই তুলতে পারলেন না। সে কি করে’ হ’ল? সে ত যোগবলে!”

 এ কথা সকলকেই স্বীকার করিলে হইল।

 হেনকালে ষষ্ঠিচরণ আসিয়া ফকিরকে বলিল “বাবা একবার বাড়ির ভিতরে যেতে হচ্ছে।”

 এ সম্ভাবনাটা ফকিরের মাথায় উদয় হয় নাই—হঠাৎ বজ্রাঘাতের মত মস্তিষ্কে প্রবেশ করিল। অনেকক্ষণ চুপ করিয়া, পাড়ার লোকের বিস্তর অন্যায় পরিহাস পরিপাক করিয়া অবশেষে বলিল “বাবা, আমি সন্ন্যাসী হয়েছি আমি অন্তঃপুরে ঢুকতে পারব না।”

 যষ্ঠিচরণ পাড়ার লোকদের সম্বোধন করিয়া বলিল “তা হ’লে আপনাদের একবার গা তুল‍্তে হচ্চে। বৌমাদের এইখানেই নিয়ে আসি। তাঁরা বড় ব্যাকুল হয়ে আছেন।”

 সকলে উঠিয়া গেল। ফকির ভাবিল এইবেলা এখান হইতে এক দৌড় মারি। কিন্তু রাস্তায় বাহির হইলেই