দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।



ছােট নদীটি বহিয়া যাইতেছিল এবং প্রথম গ্রীষ্মের শীতল প্রভাত বায়ুতে কৈলু গাছের রক্তবর্ণ পুষ্পমঞ্জরী হইতে ফুল ঝরিয়া পড়িতেছিল।
গাছের তলায় বসিয়া জুলিখা আমিনাকে কহিল “ঈশ্বর যে আমাদের দুই ভগ্নীকে মৃত্যুর হাত হইতে রক্ষা করিয়াছেন সে কেবল পিতার হত্যার প্রতিশােধ লইবার জন্য। নহিলে, আর ত কোন কারণ খুঁজিয়া পাই না।”
আমিনা নদীর পরপারে সর্ব্বাপেক্ষা দূরবর্ত্তী সর্ব্বাপেক্ষা ছায়াময় বনশ্রেণীর দিকে দৃষ্টি মেলিয়া ধীরে ধীরে কহিল “দিদি, আর ওসব কথা বলিস্নে ভাই। আমার এই পৃথিবীটা একরকম বেশ লাগিতেছে। মরিতে চায় ত পুরুষগুলাে কাটাকাটি করিয়া মরুক্গে, আমার এখানে কোন দুঃখ নাই।”
জুলিখা বলিল “ছি ছি আমিনা, তুই কি সাহজাদার ঘরের মেয়ে! কোথায় দিল্লির সিংহাসন, আর কোথায় আরাকানের ধীবরের কুটীর।”
আমিনা হাসিয়া কহিল “দিদি, দিল্লির সিংহাসনের চেয়ে আমার বুঢ়ার এই কুটীর এবং এই কৈলু গাছের ছায়া যদি কোন বালিকার বেশি ভাল লাগে তাহাতে দিল্লির সিংহাসন একবিন্দু অশ্রুপাত করিবে না।