পাতা:বিচিত্র প্রবন্ধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৫০
বিচিত্র প্রবন্ধ
শান্তিনিকেতন
২৪ আষাঢ়, ১৩৩৫

 * * * বৃষ্টি ধরে গেছে, মেঘও গেছে স’রে—চারিদিকে সরস সবুজের চিকণ আভা—একেবারে ঝলমল করছে—বাঙ্গালোরের সেই সবুজ সিল্কের সাড়িতে যেন সোনালি সূতোর কাজ করা। একটু একটু হাওয়া দিচ্চে। এখন বেলা দুটো। কেয়াফুলের গন্ধ আসছে টেবিলের একপাশে কে রেখে দিয়েছে। এই বর্ষাদিনের দুপুর-বেলাকার রোদ্দুর ঈষৎ আর্দ্র, তারপরে যেন তার আবেশ আছে; সামনের আকন্দগাছে ফুল ধরেছে, তারই উপরে গোটাকতক প্রজাপতি কেবল ঘুরঘুর ক’রে বেড়াচ্চে—কোথাও কোনো শব্দটিমাত্র নেই—চাকরবাকর আহারে বিশ্রামে রত-ছুতোর মিস্ত্রির দল এখনো কাজ করতে আসেনি, মাঝে মাঝে কেবল পাশের ঘর থেকে এক-একবার কার কাশি শুনতে পাচ্চি। বসে বসে কোনো একটা খেয়ালের কাজ করতে ইচ্ছে করছে—এই “রৌদ্র মাখানো অলস বেলায়” গুন্ গুন্ করতে কিম্বা সৃষ্টিছাড়া ধরণের ছবি আঁকতে—অথচ কোনোটাই করা হবে না—সহজ ইচ্ছেগুলোরই সহজে পূরণ হয় না। আমার ক্লান্তিভরা কুঁড়েমির ডিগ্রিটা অতটুকু কাজ করারও নিচে। সেই আমার গদিওয়ালা মোটা কেদারাটাকে নামিয়ে এনেছি—দক্ষিণের জানালার কাছে ঐটের মধ্যেই এখনি আমার কৈবল্যপ্রাপ্তি হবে ব’লে মনে হচ্চে।


শান্তিনিকেতন
৩১ ভাদ্র, ১৩৩৫


 আকাশ ঘন মেঘে আচ্ছন্ন, কিছুদিন থেকে বৃষ্টির অভাব ঘটাতে তরুণ ধানের ক্ষেত পাণ্ডুবর্ণ,তারা বিদায়কালীন বর্ষার দানের জন্যে