আনন্দ আছে। কিন্তু বাইরের রচনায় মনকে যখন আবিষ্ট করে তখন তাতে আরো যেন বেশি নেশা। ফল হয়েছে এই যে, বাইরের আর সমস্ত কাজ দরজার বাইরে এসে উঁকি মেরে হাল ছেড়ে দিয়ে চলে যাচ্চে। যদি সেকালের মতো কর্ম্মদায় থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাক্তুম-তাহোলে পদ্মার তীরে ব’সে কালের সোনার তরীর জন্যে কেবলি ছবির ফসল ফলাতুম—এখন নানা দায়ের ভিড় ঠেলে ওর জন্যে অল্পই একটু জায়গা করতে পারি—তাতে মন সন্তুষ্ট হয় না-ও চাচ্চে আকাশের প্রায় সমস্তটাই, আমারো দিতে আগ্রহ—কিন্তু গ্রহদের চক্রান্তে নানা বাধা এসে জোটে জগতের হিতসাধন তার মধ্যে সর্ব্বপ্রধান।
এতদিনে আমাদের মাঠের হাওয়ার মধ্যে শীত এসে পৌঁছল। এখন তার সব গাঁঠরি খোলা হয়নি। কিন্তু আকাশে তাঁবু পড়েছে। বাতাসে ঘাসগুলো গাছের পাতাগুলো একটু একটু সির্ সির্ করতে আরম্ভ করল। তরুণ শীতের এই আমেজটায় কঠোরে কোমলে মিশোল আছে। সন্ধ্যাবেলায় বাইরে বসি কিন্তু ঘরের ভিতরকার নিভৃত আলোটি পিছন থেকে মৃদুস্বরে ডাক দিতে থাকে—প্রথমে গায়ের কাপড়টা একটু ভাল ক’রে জড়িয়ে নিই, তার খানিকটা পরে মনটা উঠিউঠি করে—অবশেষে ঘরে ঢুকে কেদারাটায় আরাম ক’রে ব’সে মনে হয় এটুকুর দরকার ছিল। এখন দুপুর বেলায় মেঘমুক্ত আকাশের রোদ্দুর সমস্ত মাঠে কেমন যেন তন্দ্রালসভাবে এলিয়ে রয়েছে; সামনে ঐ দুটো