পাতা:বিচিত্র প্রবন্ধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চিঠির টুক্‌রি
১৫৫

বাজে কাজ—মাইল মাইল ধ’রে—যেটা হচ্ছে ছবি আঁকা; অন্যপারে রীতিমতো কেজো কাজ। অর্থাৎ এর একদিকটা দায়িত্ববিহীন আকাশ এবং আলো এবং বর্ণ বিভঙ্গীআর একটা দিক, লোকযাত্রা ও তার সংখ্যাহীন দায়িত্ব। ছবি আঁকাটাও কাজ তারই পক্ষে, যে সত্যি আর্টিস্‌ট, আমার পক্ষে ওটা মাৎলামি। মাৎলামিতে ভদ্রতা থাকে না, জীবনযাত্রার নিত্যকৃত্যগুলো একেবারেই ঝাপসা হয়ে যায়,—সময়ের উপর একটা প্লাবনের মতো বইতে থাকে—তার পরে যেই সেটা উত্তীর্ণ হয়ে যায় অমনি দেখা যায় তার পথে পথে সব নুড়ি সাজানো—তাতে কারো কোনো কাজ হয় না। এটা খামখেয়ালী সৃষ্টিকর্ত্তার নিছক ছেলেমানুষী, সময়ের যিনি অধীশ্বর তিনি মাঝে মাঝে এই রকম কোমর বেঁধে সময় নষ্ট করেন—এ সম্বন্ধে তাঁর লজ্জা নেই, কারো কাছে কোনো জবাবদিহী স্বীকার করেন না। অথচ এর বন্যাবেগ তাঁর প্রাত্যহিক কেজো কাজের ধারার চেয়ে অনেক বেশি প্রবল। বিধাতার সেই ছেলেমানুষী যখন মানুষের চিত্তে আবির্ভূত হয় তখন তার কাছ থেকে চিঠির উত্তর প্রত্যাশা করা মিথ্যে।


১৮ ফাল্গুন, ১৩৩৫

 যখন দূরে যাত্রা করবার সময় আসে তখন খোঁটা ওপড়ানো ও রসি টেনে ছেঁড়া এত কঠিন হয়ে ওঠে। মানুষ যখন বাড়ি তৈরি করে তখন নিজেকে মনে মনে আপন সুদুর ভাবীকালে বিস্তার করে দেয়—যে কালের মধ্যে তার নিজের স্থান নেই। তাই পয়লা নম্বরের ইঁট ও সেরামার্কার দামী সিমেণ্ট ফরমাস করে—তার নিজের ইচ্ছের কঠিন