পাতা:বিচিত্র প্রবন্ধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চিঠির টুক্‌রি
১৬৫

চাল অনেকদিন থেকে চলে গেছে—এখন মনের ভিতর দিকে তাকিয়ে বক্তব্য সংগ্রহ করে চলি। চিন্তা করতে করতে কথা কয়ে যাই—দাঁড় বেয়ে চলিনে, জাল ফেলে ধরি। উপরকার ঢেউয়ের সঙ্গে আমার কলমের গতির সামঞ্জস্য থাকে না। যাই হোক্‌ এ-কে চিঠি বলে না। পৃথিবীতে চিঠি লেখায় যারা যশস্বী হয়েছে তাদের সংখ্যা অতি অল্প। যে দু-চারজনের কথা মনে পড়ে তারা মেয়ে। আমি চিঠি রচনায় নিজের কীর্ত্তি প্রচার করব এ আশা করিনে।

 নীলমণি দ্বিতীয়বার এসে বললে চা তৈরি। চা বিলম্ব সয় না—পোষ্টআপিসের পেয়াদাও তথৈবচ। অতএব ইতি।


১৪ শাবণ, ১৩৩৬

 তোমার ভরপুর বিশ্রামের খবর শুনে আমার লোভ হচ্চে। লিখেছ তোমার বিছানা ঘিরে দেশীবিদেশী নানা জাতের নানা বই। সংসারে কর্ত্তব্য-না-করা ছাড়া তোমার কোনো কর্ত্তব্য নেই। যে বদমেজাজি লোকটা অন্তরে বাহিরে সর্ব্বদাই কাজের জবাবদিহী তলব করে, শুনছি তোমার ঘরে তার নাকি দরওয়াজা বন্ধ। কর্ত্তব্যবুদ্ধির এমনতরো নির্ব্বাসন কেবলমাত্র দেবলোকেই সম্ভব। এই পরিপূর্ণ চুপচাপ রসের নিবিড় স্বাদ আমিও একদা ভোগ করেছি। চারসপ্তাহ শয্যালীন অবস্থায় ছিলেম শুশ্রূষালয়ে। তখন একটি সত্য আমার কাছে খুব স্পষ্ট হয়েছিল সেটি হচ্ছে এই যে, নদীটাকে পান করা যায় না। তার চেয়ে একগ্লাস জলে অনেক সুবিধে। কিছুদিনের জন্যে যখন