পাতা:বিচিত্র প্রবন্ধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চিঠির টুক্‌রি
১৭১

কিন্তু পর্দ্দার আড়ালে আছে সত্য, তার ছন্দ ভাঙে না, সে অম্লান, সে অপরূপ, তাই যদি না হবে তবে গোলাপফুল ফুটে ওঠে কিসের থেকে কোন্ গভীরে কোথায় বাজে সেই বাশি যার ধ্বনি শুনে মানুষের কষ্টে কণ্ঠে যুগে যুগে গান চলে এসেছে আর মনে হয়েছে মানুষের কলকোলাহলের চেয়ে মানুষের এই গানেই চিরন্তনের লীলা? অঙ্গে অঙ্গে যখন নাচ দেখা দিল তখন ঐ ময়লা ছেঁড়া পর্দাটার এক কোণা উঠে গেল—“দরিদ্র নারায়ণ”কে হঠাৎ দেখা গেল বৈকুণ্ঠে লক্ষ্মীর ডান পাশে। তাকেই অসত্য ব’লে উঠে’ চলে যাব মন তত তাতে সায় দেয় না। দরিদ্রনারায়ণকে বৈকুণ্ঠের সিংহাসনেই বসাতে হবে, তাঁকে লক্ষ্মীছাড়া ক’রে রাখব না। আমাদের পুরাণে শিবের মধ্যে ঈশ্বরের দরিদ্র বেশ আর অন্নপূর্ণায় তাঁর ঐশ্বর্য্য—বিশ্বের এই দুইয়ের মিলনেই সত্য। সাধুরা এই মিলনকে যখন স্বীকার করতে চান না তখন কবিদের সঙ্গে তাঁদের বিবাদ বাধে। তখন শিবের ভক্ত কবি কালিদাসের দোহাই পেড়ে সেই যুগলকেই আমাদের সকল অনুষ্ঠানের নান্দীতে আবাহন করব যারা “বাগর্থাবিব সম্পৃক্তৌ”। যাঁদের মধ্যে অভাব ও অভাবের পূর্ণতার নিত্যলীলা।


শান্তিনিকেতন
১৯ বৈশাখ, ১৩৩৮

 আমাকে তুমি মনে মনে অনেকখানি বাড়িয়ে নিয়ে নিজের পছন্দসই করবার চেষ্টা করছ। কিন্তু আমি তো রচনার উপাদানমাত্র নই, আমি যে রচিত। তুমি যে লিখছ এখন থেকে আমার বই খুব ক’রে পড়বে