পাতা:বিচিত্র প্রবন্ধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চিঠির টুক্‌রি
১৭৫

ধ্বনি এবং নৃত্য এবং বর্ণিকাভঙ্গ, এইখানেই নটরাজের আত্মবিস্মৃত তাণ্ডব। তার পরে নটরাজ এলেন তপস্বী-বেশে ভিক্ষুরূপে! দাবির আর শেষ নেই। ভিক্ষার ঝুলি ভরতে হবে। ত্যাগের সাধনা, কঠিন সাধনা।

 এই লীলা এবং কর্ম্মের মাঝখানে নৈষ্কর্ম্ম্যের অবকাশ পাওয়া যায়। ওটাকে আকাশ বলা যেতে পারে, মনটাকে শূন্যে উড়িয়ে দেবার সুযোগ ঐখানে—না আছে বাঁধা রাস্তা, না আছে গম্য স্থান, না আছে, কর্ম্মক্ষেত্র। শরীর মন যখন হাল ছেড়ে দেয় তখনি আছে এই শূন্য।



শান্তিনিকেতন
১৫ মাঘ, ১৩৩৯

 এই পৃথিবীকে আমরা ভালো বেসেছি, এ’কে আমাদের ভালো লাগে, কেবলমাত্র এ জন্যে নয় যে, এর থেকে আমাদের প্রয়োজন সাধ্য হয়। এর রঙে রূপে রসে আমাদের মন ভুলিয়েছে। এর সকাল বেলাকার সূর্য্যোদয় কেবল যে আমাদের আলো দেয় তা নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু দেয় যাকে বলি আনন্দ। সেই আনন্দের উপাদানগুলি খুব সূক্ষ্ম খুব ব্যাপক, সেগুলির স্পর্শে খুসি হয়ে আমাদের মন দেয় সাড়া। আমার বাগানের রাস্তায় সকালে যখন বেড়াচ্চি দেখি আমার পলাশ ডালে ডালে গুটি ধরেছে, পাতা-ঝরা শিমুল গাছ ভরে গেছে কুঁড়িতে, অপেক্ষা করে আছি কবে মাঘের শেষে হাওয়া দেবে দখিন থেকে, নীল, আকাশের আঙিনায় ফুলের গুচ্ছে গুচ্ছে লাল রঙের পাগলামি লেগে যাবে। এই যে আমাদের অন্তরের সঙ্গে বাহিরের একটা ভালো-