পাতা:বিচিন্তা - রাজশেখর বসু.pdf/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিচিন্তা
১২৪

আমাদের দেহে আছে, নর্ডিক রক্তেরও ছিটোফোঁটা আছে। যাঁরা সবিশেষ জানতে চান তাঁরা কেন্দ্রীয় নৃবিদ্যা বিভাগের অধ্যক্ষ ডাঃ বিরজাশঙ্কর গুহ মহাশয়ের ‘ভারতীয় জাতি পরিচয়’ পুস্তিকা পড়ে দেখবেন। বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলে আমাদের কুলগর্ব খর্ব হয়েছে কিন্তু এই আশ্বাসও পেয়েছি যে, উৎপত্তি যেমনই হক, কৃতিত্বের সম্ভাবনা সব জাতিরই সমান, শুধু জন্মের ফলে কেউ herren volk হয় না। কর্ণের মতন আমরা সকলেই বলতে পারি―দৈবায়ত্তং কুলে জন্ম মমায়ত্তং হি পৌরুষম্।

 এচ. জি. ওয়েল্‌স তাঁর First and Last Things গ্রন্থে এক জায়গায় লিখেছেন―যত পিছনে যাওয়া যায় ততই আমাদের পূর্বপুরুষ (ও তৎস্ত্রী)-দের সংখ্যা বেড়ে যায়। আমার পিতা মাতা দুজন, পিতামহ-মহী মাতামহ-মহী চারজন, প্রপিতামহ প্রভৃতি আটজন। এই রকম দ্বিগুণোত্তর হিসাব করলে দেখা যাবে―পৃথিবীর বর্তমান লোকসংখ্যা ২০০ কোটির চাইতে আমার শততম পূর্বস্ত্রীপুরুষদের সংখ্যা অনেক বেশী। এই হিসাবে অতিগণনা আছে, কারণ পূর্বজগণের মধ্যে অন্তর্বিবাহ বিস্তর হয়েছিল। তথাপি বলা যেতে পারে―যাঁরা আমার শততম পূর্বজ, এবং তাঁদের মধ্যে যাদের বংশধর এখনও জীবিত আছে, তাঁরা শুধু আমার নয়, বর্তমান সমস্ত মানবের পূর্বজনকজননী। ওয়েল্‌সের এই সিদ্ধান্তে ত্রুটি থাকতে পারে, কিন্তু সমস্ত মানবজাতির মধ্যে যে বংশগত সম্বন্ধ এবং রক্তের যোগ আছে তাতে সন্দেহ নেই। জগতের সমস্ত লোকই আমার জ্ঞাতি, সপিণ্ড বা সমানোদক না হলেও সমপ্রভব বলা যেতে পারে।

 বিজ্ঞানীরা বর্তমান মানবজাতির নাম দিয়েছেন হোমো সাপিয়েন্স অর্থাৎ বিজ্ঞমানব। এই জাতির বয়স অনেকের মতে লক্ষ বৎসরের