ব্যতিক্রম অবশ্য আছে। এ যুগের অনেক কবি, বিশেষত যারা অত্যাধুনিক নন, এখনও নিসর্গচর্চা করেন। এমন গল্পকারও আছেন যাঁরা শুধু মানুষ-মানুষীর কথা লেখেন না, বৃক্ষ লতা ইতর প্রাণী নদী প্রান্তর ইত্যাদিকেও গ্রন্থে সাদরে স্থান দিয়েছেন। তথাপি বলা যায়, ইংরেজ ও প্রাচীন সংস্কৃত লেখকদের তুলনায় আধুনিক বাঙালী লেখক নিসর্গচর্চায় বিমুখ।
উপনিষদের ঋষি সমগ্র নিসর্গে ব্রহ্মোপলব্ধি করে বলেছেন—
নীলঃ পতঙ্গো হরিতো লোহিতাক্ষ—
স্তড়িদ্গর্ভ ঋতবঃ সমুদ্রাঃ।
—তুমি নীল পতঙ্গ, হরিদ্বর্ণ লোহিতাক্ষ শুক তড়িদ্গর্ভ মেঘ, ঋতুসকল, সমুদ্রসকল।
প্রাচীন সংস্কৃত কবিদের মধ্যে অকৃত্রিম নিসর্গচিত্রণে বোধ হয় বাল্মীকি শ্রেষ্ঠ। বর্ষাবর্ণনায় তিনি লিখেছেন,
স্বনৈর্ঘনানাং প্লবগাঃ প্রবুদ্ধা
বিহায় নিদ্রাং চিরসন্নিরুদ্ধাম্।
অনেকরূপাকৃতিবর্ণনাদা
নবাম্বুধারাভিহতা নদন্তি॥
—নানা আকারের নানা বর্ণের ভেক অবরুদ্ধ স্থানে দীর্ঘকাল নিদ্রিত ছিল, এখন তারা মেঘের শব্দে জাগরিত এবং নবজলধারায় সিক্ত হয়ে নানাপ্রকার রব করছে।
কীট্স তার The Realm of Fancy কবিতায় লিখেছেন,
Thou shall see the field-mouse peep
Meagre from its celled sleep;