ঘুম্তী নদী
ঘুরে ঘুরে ঘুম্তী চলে, ঠুম্রী তালে ঢেউ তোলে!
বেল্-চামেলির চুম্কি চুলে, ফুলেল হাওয়ায় চোখ্ ঢোলে!
কুড়্ক্ পাখীর উলুর রবে ঘুম ভাঙে তার, দিন কাটে,
ক্ষীর্রি-দোয়েল-শালিক-শামা-বুল্বুলিদের কন্সাটে্!
শণের ফুলে ছিটিয়ে সোনা শরৎ তারে সাজিয়ে যায়,
ভিণ্ডি-ফুলের কনক জবা তার নিকষে যাচিয়ে যায়।
হেমন্ত ভেট দ্যায় তাহারে আনন্দে তুই হাত ভরি’
মুক্তো-ফাটা গাজর-ফুলের চিকণ চারু ফুলকরী!
শিশির আসে নীল আকাশে বকাঞ্ ফুলের বক-ধ্বজা,—
উড়িয়ে ঘোষে ফুল্ মূলুকের নিত্যদিনের নওরোজ!
সমারোহ সর্ষে-ক্ষেতে জর্দ্দা-ফুলের একজাইএ—
খেলাঘরের খাস্ গেলাসের জলুস্ বাঁধা-রেশনাই এ!
ঘুরে ঘুরে ঘুমতী চলে রিম্ঝিমিয়ে মন্থরে,
দিনের আলোর ফুল্কিগুলি বুক জুড়ে তার সন্তরে!
* * *
ঘুম্পাড়ানি ঘুমতী নদী ঘুমিয়ে কি তুই পথ চলিস্,
ঘুমের ঘোরে ঘুরিস্ শুধুই স্বপন-পুরীর বোল্ বলিস্!
দুই কিনারায় ফুলের ফসল, পর্ণে শাড়ী ফুল-পেড়ে,
আমের ছায়া নিমের ছায়া এড়িয়ে আগে যাস্ বেড়ে;
বসন্তে তোর ডাইনে বাঁয়ে ফুলের ধূলোট, ফুলের বান,
মগজ ভরে মন হরে তোর সাত-আতরের ঐকতান!
জুলুম সুরু কর্লে নিদাঘ আঙ্রা-ঝুরো ছুটিয়ে লু,
শিরীষ-চাঁপার অঞ্জলিতে দিস ঢেকে তুই তার চিলু।