কয়াধু
ফণীর মতন রাজার দেওয়া দংশে মণিহার,
যম-যাতনা এখন এ মোর রম্য অলঙ্কার!
কেয়ূর-কাঁকণ শিথ্লে দে রে, খুলে দে কুণ্ডল,
শিখ্লে দে এই মোতির সীঁথি শচীর আঁখিজল!
রাণীত্বে আর নাই রে রুচি—নাই কিছুরই সাধ,
যে দিকে চাই কেবল দেখি লাঞ্ছিত প্রহলাদ!
যে দিকে চাই মলিন অধর, উপবাসীর চোখ
যে দিকে চাই গগন-ছোঁয়। নীরব অভিযোগ,
যে দিকে চাই ব্রতীর মূর্ত্তি নিগ্রহে অটল,
সাপের সাথে শিশুর খেলা—মন করে বিহ্বল।
মারণ-পটু মার্ছে বটু—মার্ছে বাছারে
শস্ত্রপাণি দিচ্ছে হান। বালক নাচারে,
কাঁটায় গড় মার্ছে কোড়া তুধের ছেলের গায়,
দ্যাখ্ রে রাঙ্গা দাগ্ড়াতে দ্যাখ্ আমার দেহ ছায়!
প্রাণের ক্ষতে লোহুর ধারা ঝরছে লক্ষ ধার,
আর চোখে নিদ্ আস্বে ভাবিস্ পালঙ্কে রাজার?
গুমে গুমে পুড়ে যেন যাচ্ছে শরীর মন,
ক্লান্ত আঁখি মুদ্লে দেখি কেবল কুস্বপন,
পাহাড় থেকে আছ্ড়ে ফেলে দিচ্ছে পাথরে—
প্রহলাদে মোর; দিচ্ছে ঠেলে সাপের চাতরে।
জগদ্দলন পাষাণ বুকে ফেল্ছে তরঙ্গে,
চোরের সাজে সাজিয়ে সাজা চোরেরি সঙ্গে!
নির্দ্দোষের খুনীর বাড়া দিচ্ছে রে দণ্ড।
কালনেমি, কবন্ধ, রাহু দৈত্য পাষণ্ড।
কভু দেখি ফেল্ছে বাছায় পাগ্লা হাতীর পায়—
বিদ্রোহীদের প্রাপ্য সে আজ নিরীহ জন পায়!