পাতা:বিদায়-আরতি.djvu/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বজ্র-বোধন

ধায় আকাশের উল্কামুখী হঠাৎ যেন প্রমাদ গণি’,
আগুন-ডোরে শূন্যে দোলে ইন্দ্রাণীরই স্নানের দ্রোণী।
বজ্র-বোধন বাদ্য বাজে, হিয়ায় হিয়ায় তড়িৎ চুয়ায়,
গুমোট-ভরা আষাঢ-সাঁঝের জলদ-গহন গগন-গুহায়।

 *   *   *

হ্রদের নদের কুড়িয়ে নিশাস নিশান ওড়ে! নিশান ওড়ে!
লক্ষ হিয়ার মন্যু জাগে প্রলয়-মেঘের মূর্ত্তি ধ’রে।
আস্‌ছে কে গো বাষ্পঘন! বারুদ-মাখা-অঙ্গে একা,
ঈশান-কোণে দিগ্নাবণের হাওদা তোমার যাচ্ছে দ্যাখা;
তোমার সাড়ায় বৃংহণেরি বৃহৎ ধ্বনি স্তব্ধ বনে,
সিংহ বারেক গর্জ্জে’ উঠে গুহায় পশে ত্রস্ত মনে,
ঝঞ্জা তোমার চারণ-কবি, জগৎ লোটায় পায়ের নীচে,
পায়ের ধূলার তলায় যাবা তারাষ্ট শুধু অঙ্কুরিছে।
ব্যথার তাপে জন্ম তোমার, আস্‌ছ বাথার আসন দিতে,
নবীন মেঘের গর্ভাধীনে মন্ত্র পড় রুদ্রগীতে।
জীর্ণ যা’ তা পড়্‌ছে ভেঙে—জরার ভারে পড়ছে ভেরে,
তোমার সাড়া চমক দিয়ে জাগায় অফুট অঙ্কুরেরে।
গর্ব্ব যাদের পর্ব্বে পর্ব্বে সে পর্ব্বতের উড়াও চূড়ায়,
বজ্র! কুশাঙ্কুচ্ছবি! তোমার পরশ পাহাড় গুঁড়ায়।
গ্রীষ্মে-জরা দগ্ধ ধরা ভাবছে যাবে চিরস্থায়ী!
তোমার সাড়ায় মূর্চ্ছা সে পায়, বজ! হে নীলপদ্মশায়ী।

 *   *   *

তোমার সাড়ায় তৃষায় অধীর কোন্‌ চাতকের পুড়ল ডানা,
কোন্‌ সে শাপীর ভাঙল শাখা তার কথা নেই তুলতে মানা,

৬৭