পাতা:বিদায় ভোজ - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ।

 অধিক রাত্রি জাগরণ বশতঃই হউক বা রবিবার বলিয়াই হউক, সেদিন যখন শয্যাত্যাগ করিলাম, তখন ছয়টা বাজিয়া গিয়াছে। সত্বর প্রাতঃকৃত্য সমাপন করিয়া দুইজন বিশ্বাসী কনষ্টেবল লইয়া সুশীলের বাড়ীতে গমন করিলাম।

 বিলম্ব দেখিয়া সুশীলের মাতাঠাকুরাণী ব্যস্ত হইয়া পড়িয়াছিলেন। তিনি পুত্রকে বরম্বার আমার নিকটে যাইতে আদেশ করিতেছিলেন; কিন্তু সুশীল তাঁহাকে মিষ্টবাক্যে প্রবোধ দিতে চেষ্টা করিতেছিল, এমন সময়ে আমি তথায় গিয়া উপস্থিত হইলাম।

 আমাকে দেখিবামাত্র সুশীল দাঁড়াইয়া উঠিল এবং সাদর সম্ভাষণ করিয়া তাহার মাতাঠাকুরাণীর নিকট লইয়া গেল। আমাকে দেখিয়া তিনি দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিলেন। পরে বলিলেন, “আসিয়াছ বাবা! এতক্ষণ আমি কতই ভাবিতেছিলাম। একবার দেখ বাবা! অংটীটা যদি বাহির করিতে পার, তাহা হইলে যাবজ্জীবন তোমার কেনা হইয়া থাকিব।”

 আমি শশব্যস্তে বলিলাম, “অমন কথা বলিবেন না। আমি প্রাণপণে চেষ্টা করিব।”

 এই বলিয়া সুশীলের দিকে চাহিলাম। পরে বলিলাম, “আমার সহিত দুইজন লোক আসিয়াছে। আমি তাহাদিগকে বাড়ীর দরজায় অপেক্ষা করিতে বলিয়া আসিয়াছি। তুমি তাহাদিগকে