পাতা:বিদায় ভোজ - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
দারোগার দপ্তর, ২০৩ সংখ্যা।

যাইবার জন্য প্রস্তুত হইয়া গৃহ হইতে বহির্গত হইয়াছেন, তাঁহারা এমন কথা বলেন কেন? কিন্তু সে সকল কথার উল্লেখ না করিয়া আমি হাওড়া স্টেশনে উপস্থিত হইলাম। তখন গাড়ী ছাড়িতে অতি অল্প সময় ছিল। কর্ত্তার কথায় আমার সন্দেহ হওয়ায় আমি তখন ষ্টেশন ত্যাগ করিলাম না। গোপনে দাঁড়াইয়া তাঁহাদের কার্য্য লক্ষ্য করিতে লাগিলাম। তাঁহারা টিকিট কিনিবার জন্য ব্যস্ত হইলেন না, বরং অন্য পথ দিয়া ষ্টেশন হইতে বাহির হইয়া গেলেন। আমিও মনে মনে হাসিয়া তথা হইতে প্রস্থান করিলাম।

 যেরূপ করিয়া কোচমান ঐ সকল কথা বলিল, তাহাতে আমার কোনরূপ সন্দেহ হইল না। আমি তাহাকে পুনর্ব্বার জিজ্ঞাসা করিলাম, “তাঁহারা এখন কোথায় আছেন বলিতে পার?”

 কোচমান ঘাড় নড়িয়া বলিল, “আজ্ঞে না হুজুর। পরের কাজে আমরা অত সময় নষ্ট করিতে পারি না। বিশেষত, সে দিন আমার ভাড়া অতি অল্পই হইয়াছিল বলিয়া আমি গাড়ী লইয়া সত্বর ঠিকা গাড়ীর আড্ডায় প্রস্থান করিয়াছিলাম।

 কোচমানের কথা শুনিয়া আমি সদাকে লইয়া পুনরায় থানায় প্রত্যাগমন করিলাম। পরে সদাকে বিদায় দিয়া সুশীলের ভগ্নীপতির বাড়ীতে উপস্থিত হইলাম। সুশীলের সহিত বিশেষ ঘনিষ্টতা থাকায় আমি পূর্ব্বে দুই একবার তাঁহাদের বাড়ীতে গিয়াছিলাম। সুতরাং সেখানে পঁহুছিতে বিশেষ কোন কষ্ট হইল না।

 সুশীলের ভগ্নিপতির নাম কেশবচন্দ্র। তিনি আমার পরিচিত ছিলেন। আমাকে সহসা সেখানে উপস্থিত দেখিয়া তিনি স্তম্ভিত হইলেন এবং সাদর সম্ভাষণ করিয়া তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিবার কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন।