পাতা:বিদায় ভোজ - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদায় ভোজ।
৩৩

 প্রৌঢ়কে কোন প্রশ্ন না করিয়া তাঁহাকে গ্রেপ্তার করিবার জন্য সেই কনষ্টেবলকে আদেশ করিলাম, অবিলম্বে তাঁহার হস্তে বলয় ভূষিত হইল।

 সুশীলের ভগ্নীর শ্বশুরই যে ঐ আংটী সরাইয়াছিলেন, তাহা আমার বেশ ধারণা হইয়াছিল। এখন আমার অনুমান সত্যে পরিণত হইল দেখিয়া আন্তরিক প্রীত হইলাম। পরে প্রৌঢ়ের দিকে চাহিয়া বলিলাম, “এ বয়সেও আপনি লোভ সম্বরণ করিতে পারেন নাই। আপনি যে উহা আপনার পুত্রের শ্বশুরালয় হইতে চুরি করিয়া আনিয়াছেন, তাহা আমি পূর্ব্বেই ভাবিয়াছিলাম। কেন এ কাজ করিলেন?”

 প্রৌঢ় কোন উত্তর করিলেন না, কিন্তু আমার কথায় কোনও প্রতিবাদ করিলেন না। তাহার দুই চক্ষু দিয়া অনর্গল বাষ্পবারি বিগলিত হইতে লাগিল। আমি তখন জিজ্ঞাসা করিলাম, “আমাকে কি চিনিতে পারেন নাই?”

 প্রৌঢ় কাঁদিতে কাঁদিতে উত্তর করিলেন, “বেশ চিনিয়াছি। আপনি পুলিশ-কর্ম্মচারী তাহা জানি, আর সুশীল বাবুর সহিত আপনার যে অত্যন্ত সদ্ভাব আছে, তাহাও জানি। কিন্তু কি করিব, ‘স্ত্রীবুদ্ধি প্রলয়ঙ্করী’, এক স্ত্রীলোকের পরামর্শে আমি ইহ ও পরকাল নষ্ট করিয়াছি এবং শেষ বয়সে জেলে পচিতে যাইতেছি। আপনার যাহা ইচ্ছা করুন, আমায় আর কোন কথা জিজ্ঞাসা করিবেন না।”

 অগত্যা সেই প্রৌঢ়, ব্রজেন্দ্র ও বসন্ত এই তিনজনকে থানায় চালান দিলাম। সকলেই আপন আপন দোষ স্বীকার করিল, কেবল প্রৌঢ় তাঁহার স্ত্রীর নাম উল্লেখ করিলেন না। কাজেই