পাতা:বিদায় ভোজ - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারােগার দপ্তর, ২০৩ সংখ্যা।

 সুশীল হাসিয়া উত্তর করিল, “আমরা কি কোথাও গিয়া নিশ্চিন্ত থাকিতে পারি। আমাদের অদৃষ্ট তেমন নয়! একটা সামান্য কাজের জন্য মা আমাকে বারম্বার পত্র লিখিয়াছিলেন। কি করি, কতদিন আর তাঁহার কথা অবহেলা করিতে পারি। বৃহস্পতিবারে এখানে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছি।”

 আমি ঈষৎ হাসিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “কি এমন কাজ যে, তুমি না থাকিলে হইত না?”

 আমার দিদির শ্বশুর ও শাশুড়ী তীর্থ যাত্রা করিয়াছেন। যাইবার পূর্ব্বে তাঁহারা আমার মাতাঠাকুরাণীর সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিয়াছিলেন। সেই উপলক্ষে আমাদের কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনকেও নিমন্ত্রণ করা হইয়াছিল।

 আ। কেন? তাঁহারা কি আর ফিরিবেন না?

 সু। অভিপ্রায় ত এই—তবে ঠিক বলিতে পারি না। কিন্তু সে যাহা হউক, এখন আমাদের মহা বিপদ। তুমি ভিন্ন অপর কেহই আমাদিগকে সে বিপদ হইতে মুক্ত করিতে পারিবে না।

 এই বলিয়া সুশীল এক দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিল এবং আমার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল। আমি তাহার কথার তাৎপর্য্য বুঝিতে পারিলাম না। জিজ্ঞাসা করিলাম, “কি এমন বিপদ?”

 সুশীল বলিল, “বাড়ী হইতে একটী দামী আংটী চুরি গিয়াছে। এত চেষ্টা করিলাম কিন্তু আংটীটা পাওয়া গেল না। হয়ত আমাদিগকে উহার মূল্য দিতে হইবে।”

 আ। মূল্য কত?

 সু। শুনিলাম, পাঁচ হাজার টাকা। যদি বাস্তবিকই আংটীটি না পাওয়া যায়, তাহা হইলে কেমন করিয়া অত টাকা দিব?