পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হইলে বাংলা খবরের কাগজের চেহারা ফেরে। তাই তাঁহারা কয়েকজন মিলিয়া সোমপ্রকাশ বাহির করিলেন;—সোমবারে কাগজ বাহির হইত বলিয়া নাম হইল সোমপ্রকাশ। যাঁহারা কাগজ বাহির করিয়াছিলেন, তাঁহারা শেষ দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণকে কাগজের ভার দিয়া সরিয়া পড়িলেন। বিদ্যাভূষণ মহাশয় কাগজের সম্পাদকতা করিয়া অনেক অর্থ ও সম্মান উপার্জ্জন করিয়া গিয়াছেন। যখন ভার্ণাকিউলার প্রেস অ্যাক্ট হয়, বিদ্যাভূষণ মহাশয় তাহার তীব্র প্রতিবাদ করিয়াছিলেন বলিয়া সরকার কাগজ বন্ধ করিয়া দেন, তারপর অনেকে ধরিয়া-করিয়া কাগজখানিকে আবার খুলিয়া লন।

 বিদ্যাসাগর মহাশয় যত বই লিখিয়াছিলেন, ব্রজেন্দ্রবাবু তাহার এক তালিকা দিয়াছেন, তাহাতে ‘নিষ্কৃতিলাভ প্রয়াস’ও ছাড়েন নাই, ‘প্রভাবতী সম্ভাষণ’ও ছাড়েন নাই। কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বড় বড় দুইখানি বইয়ের নাম তিনি করেন নাই। একখানির নাম ‘কস্যচিৎ ভাইপোস্য, ১ম ভাগ’, আর একখানির নাম ‘কস্যচিৎ ভাইপোস্য, ২য় ভাগ।’ বহুবিবাহ লইয়া তারানাথ তর্কবাচস্পতি খুড়োর সঙ্গে তাঁহার খুব বিচার চলে, সেই সময়ে ‘ভাইপোস্য’ বাহির হয়। কলিকাতার লোক এই বই দুখানি পড়িয়া হাসিয়া অস্থির হইত। খুড়াও ছাড়েন নাই, তিনিও জবাব দিতেন, একটা জবাবের নাম—‘লাঠি থাকিলে পড়ে না।’ কিন্তু হার খুড়োরই হইল; খুড়ো লিখিতেন সংস্কৃতে; বিদ্যাসাগর লিখিতেন বাংলায়; খুড়োর বই কেউ বুঝিতে পারিত না, বিদ্যাসাগরের বই সবাই পড়িত।

কর্ম্মাটাঁড়ে বিদ্যাসাগর

 ‘কর্ম্মাটাঁড়’ শব্দের অর্থ—করমা নামে একজন সাওতাল মাঝি ছিল, তাহার টাঁড় অর্থাৎ উঁচু জমি যাহা বন্যায়ও ডুবিয়া যায় না। এখন