পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সরকারী কর্ম হইতে অবসরগ্রহণ
৭১
হাতে দেওয়া যদি যুক্তিসিদ্ধ বলিয়া বিবেচিত না হয়, তাহা হইলে আমার সনির্ব্বন্ধ অনুরোধ, অস্তুতঃ যে-জেলায় মডেল স্কুল আছে— যেমন মেদিনীপুর বর্দ্ধমান নদীয়া, সেই জেলাগুলি যেন আমার হাতে দেওয়া হয়; কলেজ ও স্কুলগুলি বিভাগীয় ইন্‌স্পেক্টারের অধীন থাকিলে আর কোনো অসুবিধা হইবে না।” (মে, ১৮৫৭)

 এই চিঠি হস্তগত হইবার পুর্ব্বেই হ্যালিডে এপ্রিল মাসে লজ সাহেবকে ঐ শূন্যপদে নিয়োগ করিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর ইহাতে একান্ত নিরাশ হইলেন। তাঁহার প্রতি সুবিচার করা হয় নাই, তাঁহার পদোন্নতির ন্যায্য দাবি বার বার উপেক্ষিত হইয়াছে, ইহাই তাঁহার মনে হইতে লাগিল। শিক্ষা বিভাগের নুতন ডিরেক্টর—গর্ডন ইয়ং নামক এক অনভিজ্ঞ যুবক সিভিলিয়ান তাহাঁর কাজে উৎসাহের পরিবর্ত্তে নানা বাধা দিয়া আসিতেছেন, এজন্য তিনি পূর্ব্ব হইতেই বিরক্ত হইয়াছিলেন। অবশ্য ছোটলাট হ্যালিডের মধ্যস্থতায় বিবাদের কতকগুলি কারণ দূরীকৃত হইয়াছিল। সরকারী শিক্ষা বিভাগের কাজে তাঁহার যে পদোন্নতি হইয়াছে, একজন কালা কর্ম্মচারীর পক্ষে তাহার অধিক আশা করা বিড়ম্বনা,—বিদ্যাসাগরের এই দৃঢ় ধারণা জন্মিল। তিনি সরকারী কর্ম্ম হইতে অবিলম্বে অবসর লইবেন স্থির করিলেন, এবং ডিরেক্টরকে জানাইলেন,—

আপনি তিন মাসের জন্য শহর ত্যাগ করিয়া যাইতেছেন জানিয়া আমি মনে করিলাম, সরকারী কর্ম্ম হইতে শীঘ্র অবসর গ্রহণ করিবার যে সঙ্কল্প করিয়াছি তাহা আপনাকে জ্ঞাত করাইবার ইহাই প্রকৃত সুযোগ। এই সঙ্কল্পের মূলে যে-সকল কারণ আছে তাহা ব্যক্তিগত—সাধারণের সহিত তাহার কোনো সম্বন্ধ নাই, সুতরাং সেগুলি বিবৃত করিতে বিরত হইলাম।” (২৯ আগষ্ট, ১৮৫৭)