পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ
আশা করি, সরকার চিরদিন আমার প্রতি যে অবিচলিত অনুগ্রহ, বিবেচনা এবং স্নেহ প্রকাশ করিয়া আসিয়াছেন তজ্জন্য আমার অন্তরের কৃতজ্ঞতা নিবেদন ধৃষ্টতা বলিয়া বিবেচিত হইবে না।”

 শিক্ষা বিভাগের ডিরেক্টর বিদ্যাসাগরের পদত্যাগপত্র অনুমোদন করিয়া, মঞ্জুরীর জন্য সরকারের কাছে পাঠাইলেন।

 অনেকেই বলিয়া থাকেন, বালিকাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সম্পর্কিত ব্যাপারে ডিরেক্টরের সহিত বিরোধের ফলেই বিদ্যাসাগর পদত্যাগ করেন। কিন্তু হ্যালিডেকে লিখিত বিদ্যাসাগরের একখানি আধা-সরকারী পত্রে প্রকৃত কারণগুলি প্রকাশ হইয়া পড়িয়াছে। বিদ্যাসাগর লিখিতেছেন,—

“বিশেষ চিন্তা করিয়া দেখিলাম আমার পদত্যাগপত্রের যে-অংশগুলি আপনার কাছে আপত্তিকর ঠেকিয়াছে, সঙ্গতি বা ঔচিত্যের দিক দিয়া সে-অংশগুলি আমি উঠাইয়া লইতে পারি না। শারীরিক অসুস্থতা আমার পদত্যাগের একটি প্রধান কারণ বটে, কিন্তু বিবেকধর্ম্মানুসারে বলিতে গেলে ইহাকে একমাত্র কারণ বলিতে পারি না। তাহাই যদি হইত, তাহা হইলে দীর্ঘ অবসর গ্রহণ করিয়া আমি স্বাস্থ্যের উন্নতি করিতে পারিতাম। বর্ত্তমান অবস্থায় সরকারী চাকরি করা যে আমার পক্ষে অনেক সময় অপ্রীতিকর এবং অসুবিধাজনক বোধ হইয়াছে, এবং যে-ব্যবস্থার উপর নির্ভর করিয়া বাংলার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান চলিতেছে, তাহা যে অর্থের অপব্যয় হইতেছে মাত্র—এ-সব কথা আপনাকে বহুবার বলিয়াছি। আপনি জানেন, আমি অনেক সময় কাজে বাধা পাইয়াছি। এ ছাড়া, দেখিয়াছি পদোন্নতির আর কোনো আশা নাই, কারণ আমার ন্যায্য দাবি একাধিকবার উপেক্ষিত হইয়াছে।