পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সরকারের বে-সরকারী পরামর্শদাতা
৮৯
পায় তাহা শিক্ষা-নামের অযোগ্য, এবং পল্লীসম্পর্কে প্রায় কিছুই না শিখিয়া, কেবল অল্পস্বল্প ইংরেজীর জ্ঞান লইয়া সাধারণতঃ এই প্রতিষ্ঠান হইতে বিদায় গ্রহণ করে।...
“এখানে-শিক্ষিত কতকগুলি যুবকের পরবর্তী নিন্দনীয় জীবন প্রতিষ্ঠানটির অখ্যাক্তির কারণ হইয়াছে। আমি মনে করি, ওয়ার্ডস ইনষ্টিটিউশন হইতে নিষ্ক্রান্ত ছাত্রদের সহিত অন্য তরুণ জমিদারের তুলনা করিলেই দেখা যাইবে শেষোক্ত তরুণরাই ভাল।...
“এখন নাবালকত্বের বয়সের সীমা ১৮ বৎসর। ইহা বাড়াইয়া ২১ বৎসর করিলে, আমার বিবেচনায়, ছাত্রদের পক্ষে খুবই হিতকর হইবে, কেন-না সেক্ষেত্রে তাহারা নিজের উন্নতিসাধনের জন্য দীর্ঘতর অবসর পাইবে এবং এমন বয়সে বিষয়-সম্পত্তির অধিকারী হইতে পারিবে যখন মানুষের চরিত্র একরকম গঠিত হইয়া যায়।” (১ সেপ্টেম্বর, ১৮৬৫)

 শারীরিক শাস্তিবিধানের সম্বন্ধে উড্রো সাহেব রিপোর্টে কিছুই উল্লেখ করেন নাই। নাবালক জমিদারদের পক্ষে ইহার যে একান্ত প্রয়োজন এবং এতদ্ভিন্ন শৃঙ্খলারক্ষা যে অসম্ভব, পরিচালক রাজেন্দ্র- লালের এই মত লেন সাহেব সমর্থন করিয়াছিলেন। বলা বাহুল্য, সরকারও এই মত গ্রহণ করিয়াছিলেন।

 ইহার পর বিদ্যাসাগর আর অধিক দিন ওয়ার্ডস ইনষ্টিটিউশনের পরিদর্শক থাকেন নাই। তাঁহার পরিদর্শনের শেষ তারিখ ২৮ মার্চ, ১৮৬৫। খুব সম্ভব, রাজেন্দ্রলাল মিত্রের সহিত কোনো বিষয়ে মতভেদই তাঁহার পদত্যাগের কারণ।[১]

  1. বাংলা-গভর্ন্মেণ্টের রাজস্ব-বিভাগের দপ্তরে আমি ওয়ার্ডস ইন্‌স্টিটিউশন সংক্রান্ত বিদ্যাসাগরের তিনখানি রিপোর্ট দেখিয়াছি। সুবলচন্দ্র মিত্রের পুস্তকেও এগুলি মুদ্রিত হইয়াছে বটে, কিন্তু অনেকস্থলে ভুল, এমন কি মূলের সহিত পার্থক্য আছে।