পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

স্বাধীন কর্ম্মক্ষেত্রে

 বিদ্যাসাগরের সরকারী কর্ম্ম হইতে অবসরগ্রহণ দেশ ও দশের পক্ষে প্রভূত কল্যাণকর হইয়াছিল। তাঁহার একটা মোটা রকমের আয় কমিয়া গেল বটে, কিন্তু তিনি মোটেই বিচলিত হইলেন না—তাঁহার স্বরচিত পুস্তক বিক্রয়ের আয়ই তখন মাসিক তিন-চার হাজার টাকা।[১] তিনি এইবার স্বাধীনভাবে কর্ম্মক্ষেত্রে অগ্রসর হইবার সুযোগ পাইলেন।

মেট্রোপলিটান্ ইনষ্টিটিউশন

 মেট্রোপলিটান কলেজের প্রতিষ্ঠা তাঁহার অতুলনীয় কীর্ত্তি। ইহাই বাঙালীর নিজের চেষ্টায় নিজের অধীনে স্থাপিত উচ্চতর শিক্ষার প্রথম কলেজ। মেট্রোপলিটানের নাম এখন বিদ্যাসাগর কলেজ হইয়াছে। পুর্ব্বে ইহার নাম মেট্রোপলিটান ছিল না। ১৮৫৯ খৃষ্টাব্দে কয়েকজন প্রতিষ্ঠাপন্ন ভদ্রলোক মিলিয়া শঙ্কর ঘোষের লেনে ‘ক্যালকাটা ট্রেনিং স্কুল’ নামে এক ইংরেজী বিদ্যালয় স্থাপন করেন। সরকারী স্কুল অপেক্ষা অল্প বেতনে মধ্যবিত্ত ঘরের হিন্দু-বালকগণকে ইংরেজী শিক্ষা দান করাই এই প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল। মিশরীদের স্কুলে মাহিনা কম ছিল বটে, কিন্তু খৃষ্টধর্ম্ম প্রচারিত হইত বলিয়া হিন্দুরা সেখানে ছেলেদের পাঠাইতে চাহিত না। প্রথম কয়েক মাস প্রতিষ্ঠাতারাই স্কুল পরিচালনা করিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর সরকারী চাকরি ছাড়িয়া দিয়াছেন জানিতে পারিয়া তাঁহারা বিদ্যাসাগরকে ও তাঁহার বন্ধু রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে

  1. ১৮৪৮-৪৯ সালে বিদ্যাসাগর সংস্কৃত প্রেস স্থাপন করিয়াছিলেন; সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃত প্রেস ডিপজিটারীও চালাইতে থাকেন। সংস্কৃত প্রেস হইতে মুদ্রিত সকল পুস্তক বিক্রয়ের জন্য ডিপজিটারীতে মজুত থাকিত। ব্যবসায়টি দৃঢ় ভিত্তির উপর স্থাপিত হইয়াছিল এবং বহু বৎসর ধরিয়া ইহা হইতে রীতিমত লাভ হইত।