পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চারিত্রিক বিশেষত্ব
১১৯

কিন্তু শিক্ষা ও সমাজ সংক্রান্ত ব্যাপারে তিনি নিজের পূর্ণশক্তি নিয়োগ করিয়াছিলেন।

 ছেলেরা ভবিষ্যতে যাতে ভাল বাংলা লেখক ও সাহিত্যস্রষ্টা হইতে পারে, তিনি এমনভাবে সংস্কৃত কলেজের ছাত্রদের গড়িতে চাহিয়াছিলেন। তাঁহার মতে, সংস্কৃত ও ইংরেজী, এই উভয় ভাষায় ভালরূপ ব্যুৎপত্ত্বি না জন্মিলে, কেহু ভাল বাংলা লেখক হইতে পারে না। তাই ইংরেজী ___ প্রসাদগুণ এবং সংস্কৃতের ভাষাসম্পৎ তাঁহার রচনায় পরিস্ফুট।

 বিদ্যাসাগরের আর একটি গুণ ছিল—তাঁহার লোক-নির্ব্বাচনের অদ্ভুত ক্ষমতা। এই গুণের অধিকারী ছিলেন বলিয়াই তাঁহার পক্ষে অনেক প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তোলা সহজ হইয়াছিল। দুএকটি উদাহরণ দিলেই বুঝতে পারা যাইবে।

 ‘হিন্দু পেট্রিয়ট’-এর[১] প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক সুবিখ্যাত হরিশ্চন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হইলে (১_ জুন১৮৬১) তাঁহার নিঃসহায় পরিবার- বর্গের মুখ চাহিয়া, বিদ্যাসাগরের অনুরোধে মহাত্মা কালীপ্রসন্ন সিংহ পাঁচ হাজার টাকা দিয়া কাগজখানি ও ছাপাখানার সমস্ত সরঞ্জাম কিনিয়া লন। হরিশবাবুর মৃত্যুর পর শম্ভুচন্দ্র মুখোপাধ্যায় অতি অল্পদিন মাত্র কাগজখানির সম্পাদকতা করিয়াছিলেন। শেষে সিংহ-মহাশয় কাজ চালাইবার সমুদয় ভার বিদ্যাসাগরের হাতে দেন।

“এই মাহেন্দ্র যোগে কৃষ্ণদাস পালের উপর বিদ্যাসাগরের দয়া হইল। কৃষ্ণদাসকে ডাকাইয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় হিন্দু পেট্রিয়ট চালাইতে
  1. ১৮৫৩ সালের জানুযারী (?) মাসে হিন্দু, পেট্রিয়ট প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রে প্রকাশ:—
    “মাঘ, ১২৫৯।...হিন্দু পেট্রিয়ট নামক সাপ্তাহিক ইংরাজি পত্র প্রকাশারম্ভ হয়।”— সংবাদ প্রভাকর, ১ বৈশাখ ১২৬০ (১২ এপ্রিল ১৮৫৩)।