পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

২৫

স্বহস্তে পাক করিয়া কি খাওয়াইত, তা জানি না; আমাদের দেশের দুটো ভাল জিনিষ আছে, আমি মনে করেছিলাম তাই খাওয়াব। তিনি বলিলেন—কি কি? আমি বলিলাম—নৈহাটির গজা আর রসমুণ্ডি। তিনি বলিলেন—আচ্ছা, তা তবে আনিস্। আমি বলিলাম—আপনি যখন আনিস্ বললেন, তখন শুভস্য শীঘ্রং—আমি আসছে রবিবারেই লইয়া আসিব। তারপর আমরা অনেকক্ষণ বসিয়া রহিলাম। আশুবাবু সম্বন্ধে অনেক কথাবার্ত্তা হইল। একজন অসাধারণ শক্তিশালী পুরুষ কেমন করিয়া বহিয়া যায়, আশুবাবু তাহার একজন নিদর্শন। উনি যেখানেই গিয়াছেন, সেখানেই লোকে উঁহার বিদ্যার সুখ্যাতি করে, কিন্তু স্বভাবের নিন্দা করে। আমি বলিলাম—যদি উনি নিবৃত্তিপ্রবৃত্তি করিয়া আপনার কলেজে থাকেন, আপনার কলেজেরও মঙ্গল, ওঁরও মঙ্গল। তিনি বলিলেন— তাই ত আমি ওকে নিলাম ও একেবারে ২০০৲ টাকা দিতে রাজী হলাম।

 সেদিন সন্ধ্যা হয়-হয় দেখিয়া আমি আসিয়া নৌকায় উঠিলাম, এবং বাড়ি আসিয়াই রসমুণ্ডি ও গজার ফরমাস দিলাম। পরের রবিবারে ঐ দুটি জিনিষ লইয়া আমি আবার নৌকা করিয়া তাঁহার বাড়ি গেলাম। গিয়া দেখি তাঁহার ছোট জামাই শরৎ বাড়ির সামনে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম—বিদ্যাসাগর মহাশয় কোথা। সে বলিল— জরুরী কাজ পড়ায় কলিকাতায় চলিয়া গিয়াছেন। আমি হতাশ হইয়া পড়িলে শরৎ বলিল—আপনি কি তাঁর জন্যে কিছু খাবার এনেছিলেন না-কি? আমি বলিলাম—এনেছি বইকি? সে বলিল—তিনি ত আর খান না। আমরাই খাই, এটাও আমাদের দিয়ে যান। কারণ তিনি ত খাওয়াইয়াই খুশী। আমি বলিলাম—ভাল, তাই-ই। নৌকায় আছে, নাও। শরৎ হাঁড়ি দুটি লইয়া বাড়ির ভিতর চলিয়া গেল, আমিও ফিরিদা আসিয়া নৌকায় বসিলাম। মনটা বড় খারাপ হইল। সোমবারে