বিদ্যাসাগর প্রসঙ্গ
সংস্কৃত শিক্ষার সংস্কার
খৃষ্টীয় অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীর ঘটনা-বিপর্যয়ের ফলে বাংলার পুরাতন ধারা একেবারে বদলাইয়া গিয়াছে। অষ্টাদশ শতাব্দী রাষ্ট্রনৈতিক পরিবর্ত্তনের যুগ, আর উনবিংশ শতাব্দী চিন্তারাজ্যের বিবর্ত্তনের যুগ। এই শেষোক্ত যুগকে ‘রেনেসাঁস্’ বা ‘ভারতের নবজীবন’ আখ্যা দেওয়া যাইতে পারে। ইংরেজ যখন ভারতবর্ষে দখল আরম্ভ করে, তখন দেশীয় রাজ্যগুলির শুধু যে ভগ্নাবস্থা ছিল তাহা নহে,—সমাজ এবং ভারতীয় মধ্যযুগের সভ্যতাও তখন জীর্ণ, মৃত। পুরাতন ভাঙিয়া পড়িয়াছে, কিন্তু নূতন তখনও গড়িয়া উঠে নাই। এইরূপ অবস্থায় কিছুদিন কাটিয়া গেল। পলাশীর যুদ্ধের ৭৫ বৎসর পরে, লর্ড উইলিয়ম বেণ্টিঙ্কের আমলে নবযুগের আরম্ভ।
রাজা রামমোহন রায় এই নবযুগের প্রবর্ত্তক। তিনি যে বিপ্লবের সূচনা করেন, তাহা চিন্তারাজ্যের বিপ্লব। সে আন্দোলন ক্রমে শক্তিসঞ্চয় করিয়া এদেশে আমূল পরিবর্তন আনিয়াছে। সেই পরিবর্তনের ফল-নূতন সাহিত্য, মনের নূতন বিশ্বাস, সমাজের নূতন গঠন, রাষ্ট্রনৈতিক ক্ষেত্রে নুতন জীবন,—এক কথায় ভারতবর্ষের আধুনিক সভ্যতা।
এই পরিবর্তন দুই ধারায় বহিয়া গিয়াছে। পাশ্চাত্য জ্ঞানবিজ্ঞানের আলোচনা ইহার এক ধারা; অপর ধারা—ভারতের সেই বিস্মৃত বিশুদ্ধ প্রাচীন সাহিত্য, জ্ঞান ও চিন্তার পুনরুদ্ধার। এই উভয় ক্ষেত্রেই