পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সংস্কৃত-শিক্ষার সংস্কার

সেরেস্তাদারের পদ খালি হয়। ঈশ্বরচন্দ্র সেই পদের প্রার্থী হইলেন। সংস্কৃত কলেজের কার্য্যের সহিত ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সেক্রেটারি —কাপ্তেন মার্শালের ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল! সেই সূত্রে ঈশ্বরচন্দ্রের ছাত্রজীবনের কৃতিত্বের সহিত তিনি পুর্ব্ব হইতেই পরিচিত ছিলেন। মার্শাল ঈশ্বরচন্দ্রের উচ্চ প্রশংসা করিয়া বঙ্গীয় গভর্ন্মেণ্টের নিকট এক সুপারিশ-পত্র পাঠাইলেন। সেই পত্র হইতে জানা যায়, দ্যিাসাগর একদিকে যেমন সাহিত্যের সর্ব্ববিভাগে বুৎপত্তিলাভ করিয়াছিলেন, তেমনি স্মৃতিশাস্ত্রেও তাঁর জ্ঞান অল্প ছিল না। ইংরেজী তখন তিনি সামান্যই জানিতেন! সেই বৎসরের ২৯এ ডিসেম্বর বিদ্যাসাগর মাসিক ৫০৲ টাকা বেতনে সেরেস্তাদারের পদে বাহাল হইলেন। বর্ত্তমান বাংলার সর্ব্বপ্রধান শিক্ষাগুরুর ইহাই কর্ম্মজীবনের আরম্ভ।

 কাপ্তেন মার্শাল সেরেস্তাদারের কাজে খুশী হইয়া উঠিলেন। পণ্ডিতের সংশ্রবে আসিয়া তিনি ক্রমেই তাঁহার বুদ্ধির সূক্ষ্মতা, জ্ঞানের গভীরতা, কর্ম্মের ক্ষমতা এবং স্থৈর্য, তেজস্বিতা ও চরিত্রবলে মুগ্ধ হইয়া পড়িতে লাগিলেন। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে থাকিবার কালে অনেক উচ্চশ্রেণীর ইংরেজ ও গণ্যমান্য দেশীয় বড়লোকের সহিত বিদ্যাসাগরের আলাপ-পরিচয় হয়। কাপ্তেন মার্শাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন বা শিক্ষা-পরিষদের সম্পাদক ডাঃ ময়েটের সহিত বিদ্যাসাগরকে পরিচিত করাইয়া দেন। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের চাকরি বিদ্যাসাগরের জীবনের গতি নির্দ্দেশ করিল। এই চাকরি- গ্রহণের ফলে তাঁহাকে ভাল করিয়া ইংরেজী শিখিতে হইল; শেষে এই চটি-পরা পণ্ডিতের ইংরেজীর দখল দেখিয়া নব্য শিক্ষিতেরাও বিস্ময়াবিষ্ট হইয়াছিলেন।

 ১৮৪৬ সালের মার্চ মাসে রামমাণিক্য বিদ্যালঙ্কারের পরলোকগমনে কলিকাতা সংস্কৃত কলেজে সহকারী সম্পাদকের পদ শূন্য হয়। ডাঃ ময়েট