পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ

উপর ভার পড়িল। ১৬ই ডিসেম্বর বিদ্যাসাগর ‘দীর্ঘচিন্তা ও যথেষ্ট বিবেচন-প্রসূত’ এক বিস্তৃত রিপোর্ট শিক্ষা-পরিষদে দাখিল করিলেন|[১] কলেজ-পরিচালনের বিধি-ব্যবস্থা ও পাঠ্যপ্রণালীর বহুবিধ পরিবর্তন সমর্থন করিয়া এই রিপোর্ট লিখিত। পুনর্গঠিত সংস্কৃত কলেজ যে সংস্কৃত বিদ্যানুশীলনের কেন্দ্র ও মাতৃভাষা-রচিত সাহিত্যের জন্মক্ষেত্র হইবে, এবং এই বিদ্যালয়ের ছাত্ররাই যে শিক্ষকরূপে একদিন জনসাধারণের মধ্যে শিক্ষা, জ্ঞান ও সাহিত্যরস বিতরণ করিবে,—পরির্ত্তনের ফল যে একান্ত শুভ ও আশাপ্রদ,— রিপোর্ট তিনি এ কথা দৃঢ়তার সহিত জানাইলেন।

 শিক্ষা-পরিষদ এমনই একজন কার্য্যপ_, দৃঢ়চিত্ত লোককে চাহিতেছিলেন। সংস্কৃত কলেজ সম্পূর্ণরূপে পুনর্গঠিত করা যায় কি না—এই, কথাই কিছুদিন হইতে তাহারা ভাবিতেছিলেন। ঠিক এই সময়ে সংস্কৃত কলেজের সেক্রেটারি রসময় দত্ত অবসর গহণ করিলে পুরাতনের বাধা সরিয়া গেল। শিক্ষ-পরিষদ বঙ্গীয় গভর্ন্মেণ্টকে লিখিলেন—

“দশ বছর ধরিয়া বাবু রসময় দত্ত সংস্কৃত কলেজের সম্পাদকের কাজ করিয়া আসিতেছেন। সংস্কৃত ভাষায় তাঁহার জ্ঞান নাই বলিলেও চলে। তাহার উপর সারাদিন তিনি অন্যত্র দায়িত্বপূর্ণ কার্য্যে নিবিষ্ট থাকেন। কলেজের যখন কাজ চলে, তখন তিনি কলেজে উপস্থিত থাকিতে পারেন না। ফলে কলেজের শৃঙ্খলা শিথিল হইয়াছে। হাজিরা খাতার উপর মোটেই নির্ভর করা চলে না, এবং নানারূপ গোলমাল ও অব্যবস্থায় কলেজের অবস্থা সঙ্গীন হইয়া দাঁড়াইয়াছে, কার্য্যকারিতা একান্তভাবে ক্ষুণ্ন হইয়াছে। অথচ এই বিদ্যালয় এক
  1. এই দীর্ঘ রিপোর্টে General Report on Public Instruction, etc. 1850-51 গ্রন্থের ৩৭-৪৩ পৃষ্ঠায় মুদ্রিত হইয়াছে।