পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সংস্কৃত-শিক্ষার সংস্কার

বিপুল ব্যয়সাধ্য অনুষ্ঠান, কারণ কলেজের ছেলেদের নিকট হইতে মাহিনা লওয়া হয় না।

‘বাংলায় সাহিত্য-সৃষ্টি ও সাহিত্যের উন্নতিবিধানের যে আন্দোলন সুরু হইয়াছে, কর্ম্মিষ্ঠ লোকের হাতে পড়িলে সংস্কৃত কলেজ সেই আন্দোলনের সহায়করূপে অনেক কাজ করিতে পারে।

‘বাবু, রসময় দত্তের পদত্যাগে এই প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠনের একমাত্র অন্তরায় দূর হইল। কলিকাতা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ডাঃ স্প্রেঙ্গার আর্ব্বী ভাষায় যেরূপ সুপণ্ডিত, সেইরূপ সংস্কৃত ভাষায় ব্যুৎপন্ন কোনো পাশ্চাত্য পণ্ডিত পাওয়া যাইতেছে না। এক্ষেত্রে শিক্ষা-পরিষদের মতে, পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র শর্ম্মা একমাত্র উপযুক্ত ব্যক্তি। একদিকে তিনি ইংরেজী ভাষায় অভিজ্ঞ, অন্যদিকে সংস্কৃত-শাস্ত্রে প্রথম শ্রেণীর পণ্ডিত। শুধু তাই নহে, তাঁহার মত উদ্যমশীল, কর্ম্মনিপুণ, দৃঢ়চিত্ত লোক বাঙালীর মধ্যে দুর্লভ। তাঁহার রচিত ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি’ ও ‘চেম্বার্সের বায়োগ্রাফি’র বঙ্গানুবাদ সমস্ত গভর্ন্মেণ্ট স্কুল-কলেজেই বাংলার পাঠ্যপুস্তক হিসাবে পড়ানো হয়। তিনি অধ্যক্ষ হইলে বর্তমান সহকারী সম্পাদক শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নকে সাহিত্য-শাস্ত্রের অধ্যাপকের পদ দেওয়া যাইতে পারে। সম্পাদক ও সহ-সম্পাদকের পদ উঠিয়া যাইবে। এই দুই পদের বেতন মোট ১৫০৲ টাকা। অধ্যক্ষকে এই ১৫০৲ টাকা দিলেই চলিবে। সুতরাং এই পরিবর্ত্তনে ব্যয়বৃদ্ধির কোনো আশঙ্কা নাই।

‘গভর্ন্মেণ্টের অনুমোদনের অপেক্ষায় সম্প্রতি অস্থায়িভাবে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্রের উপরই সংস্কৃত কলেজের তত্ত্বাবধানের ভার অর্পিত হইল।” (৪ঠা জানুয়ারি, ১৮৫১)[১]

  1. Education Consultation, 29 Jany. 1851, No.3.