পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ

অতিরিক্ত সংস্কৃত ক্লাস খোলা দরকার। ইহার জন্য অন্তুতঃ ত্রিশ টাকা বেতনের একজন সুদক্ষ শিক্ষক রাখিতে হইবে। ইংরেজী-বিভাগ ভাল করিয়া চালাইতে হইলে পাঁচজন শিক্ষকের প্রয়োজন। এই পাঁচজনের বেতন মাসে ৩৬০ টাকা লাগিবে। তন্মধ্যে এখন তিনজন শিক্ষক ও সংস্কৃত গণিতশাস্ত্রের অধ্যাপককে মাসিক ২৮২ টাকা দিতে হয়। অতএব যে টাকাটা প্রাচ্যবিদ্যাকেন্দ্রসমূহের জন্য খরচ করিবার কথা, সেই টাকা হইতে আর ৭৮ টাকা দিলেই এখন চলিতে পারে। অবশ্য সংস্কৃতবিভাগের একজন নিম্নশ্রেণীর শিক্ষকের জন্য আর ৩০ টাকা লাগিবে। তাহা হইলে মাসিক মোট ১০৮, অর্থাৎ বার্ষিক ১২৯৬ টাকা, অধিক খরচা হইবে। ডিরেক্টরদের পত্রের অঙ্গীকার ধরিয়া এবং অঙ্কের হিসাব করিয়া এই সুদীর্ঘ পত্রে বিদ্যাসাগর প্রমাণ করিলেন, বার্ষিক ২৪,০০০ টাকা পর্যন্ত সংস্কৃত কলেজের জন্য ব্যয় করা যাইতে পারে। সরকার সংস্কৃত কলেজের ১৮৪০ সালের খরচা বার্ষিক ১৭,৬৯৪ টাকা মঞ্জুর করেন। সেই অবধি বোধ হয় এই বিশ্বাস চলিয়া আসিতেছে যে, সংস্কৃত কলেজ উহার অতিরিক্ত আর একটি পয়সাও সরকারের নিকট দাবি করিতে পারে না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মাত্র ঐটুকুই দেয় নয়। কাজেই বর্ত্তমানে বার্ষিক আরও ১২৯৬ টাকা দিলেও সরকারের বাস্তবিক অধিক ব্যয় হইবে না।

 ইংরেজী ও সংস্কৃত—উভয় ভাষার এইরূপ মিলিত শিক্ষার উপকার উপলব্ধি করিয়া শিক্ষা-পরিষদ সরকারের সম্মতিক্রমে এই অধিক অর্থব্যয় মঞ্জুর করিলেন। বিদ্যাসাগরের যুক্তিপূর্ণ প্রার্থনা পূর্ণ হইল। ১৮৫৩, নভেম্বর মাসে ইংরেজী-বিভাগে একটি অধিকতর বিস্তৃত ও সুনিয়ন্ত্রিত শিক্ষা-প্রণালী অবলম্বিত হইল। পাঁচজন শিক্ষকের মধ্যে মাসিক একশত টাকা, বেতনে প্রসন্নকুমার সর্বাধিকারী হইলেন ইংরেজীর অধ্যাপক ও শ্রীনাথ দাস হইলেন গণিতের অধ্যাপক। পূর্ব্বে সংস্কৃতে অঙ্কশাস্ত্রের