পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সংস্কৃত কলেজের পুনর্গঠন
১৯

‘আমাদেরই জয়’ এই ভাব ফুটিয়া উঠে। এই-সব বিবেচনা করিয়া ভারতবর্ষী পণ্ডিতদের নূতন বৈজ্ঞানিক সত্য গ্রহণ করাইবার কোনো আশা আছে, এমন আমার বোধ হয় না। যে-প্রদেশের পণ্ডিতদের দেখিয়া ডাঃ ব্যালাণ্টাইন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিয়া এই-সব সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছেন, সেই উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তাঁহার মত খাটাইলে সুফল পাইবার সম্ভাবনা।

বাংলার কথা স্বতন্ত্র। দুইস্থানের বিভিন্ন অবস্থা বিবেচনা করিয়া কার্য্য করা উচিত এবং ‘জোর করিয়া সামঞ্জস্য-বিধান বিজ্ঞের কার্য্য নহে’ তাঁহার এই মন্তব্যগুলি খুবই সমীচীন। ভারতবর্ষের এই অংশের স্থানীয় অবস্থার দরুণ শিক্ষাবিস্তার-কার্যে আমাদের ভিন্ন প্রণালী অবলম্বন করিতে হইয়াছে। আমি সযত্নে এখানকার অবস্থা পর্য্যবেক্ষণ করিয়াছি; তাহাতে আমার মনে হইয়াছে, দেশীয় পণ্ডিতদের কোনকিছুতে হস্তক্ষেপ করা মোটেই উচিত নয়। তাঁহাদের মনস্তুষ্টি সম্পাদনের প্রয়োজন নাই, কেন-না আমরা তাঁহাদের কোনরূপ সাহায্য চাই না। আজ ইহাদের সম্মানও লুপ্তপ্রায়, কাজেই এই দলকে ভয় করিবার কারণ দেখি না। ইহাদের কণ্ঠ ক্ষীণ হইতে ক্ষীণতর হইয়া আসিতেছে। এদলের পূর্ব্ব-আধিপত্য ফিরিয়া পাইবার আর বড় সম্ভাবনা নাই। বাংলা দেশে যেখানে শিক্ষার বিস্তার হইতেছে, সেইখানেই পণ্ডিতদের প্রভাব কমিয়া আসিতেছে। দেখা যাইতেছে, বাংলার অধিবাসীরা শিক্ষালাভের জন্য অত্যন্ত ব্যগ্র। দেশীয় পণ্ডিতদের মনস্তষ্টি না করিয়াও আমরা কি করিতে পারি, তাহা দেশের বিভিন্ন অংশে স্কুল-কলেজের প্রতিষ্ঠাই আমাদের শিখাইয়াছে। জনসাধারণের মধ্যে শিক্ষাবিস্তার—ইহাই এখন আমাদের প্রয়োজন। আমাদের কতকগুলি বাংলা স্কুল স্থাপন করিতে হইবে, এই-সব স্কুলের জন্য প্রয়োজনীয় ও শিক্ষাপ্রদ বিষয়ের কতকগুলি