পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ

কলিকাতার ভার্ণাকিউলার লিট্‌রেচার সোসাইটি নানাবিধ উত্তম পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করিতেন। এই সভার উপর বিদ্যাসাগরের কর্ত্তৃত্ব ছিল।[১] তত্ত্ববোধিনী সভার অধীনে একটি প্রবন্ধ-নির্ব্বাচন সমিতি গঠিত হইয়াছিল; বিদ্যাসাগর এই সমিতিরও একজন সভ্য ছিলেন।

 রমেশচন্দ্র দত্তের ভাষায় বলিতে হয়,—“এই উৎসাহী যুবক শিক্ষাব্যবস্থাপকের যশ চতুর্দ্দিকে বিকীর্ণ হইয়া পড়িল। বাংলার শ্রেষ্ঠ ও শিক্ষিত জমিদারবর্গ তাঁহাকে বন্ধু বলিয়া গণ্য করিতে লাগিলেন। বিখ্যাত সাহিত্যিকরা তাঁহাদের নূতন সহযোগীকে অভ্যর্থনা করিয়া লইলেন। ভারতবর্ষের প্রকৃত উন্নতিকামী ইংরেজবর্গ একজন সহকর্ম্মী পাইলেন।....সংস্কৃত-শাস্ত্রে পাণ্ডিত্যলাভ করিয়া বিদ্যাসাগর শুধুই যে বিপুল খ্যাতি অর্জ্জন এবং সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ-পদ লাভ করিয়াছিলেন তাহাই নয়, ভারতীয় চিন্তার বাহিরের শক্তিপ্রদ ভাবধারাও তিনি অনায়াসে নিজের মধ্যে গ্রহণ করতে ইতস্ততঃ করেন নাই। সবল স্বাস্থ্যের সহিত সতেজ হৃদয় পাইয়া তিনি সংস্কারের জন্য অবিশ্রান্ত সচেষ্ট ছিলেন।

 কিন্তু সংস্কৃত কলেজের শিক্ষা-প্রণালীর সংস্কারই শিক্ষা-বিস্তারে বিদ্যাসাগরের শেষ ও প্রধান কার্য নহে।

  1. এই সভার ১৮৫৩, ৮ই জুলাই তারিখের মাসিক অধিবেশনে নিম্নলিখিত প্রস্তাবটি গৃহীত হয় —“ভবিষ্যতে যেকোনো গ্রন্থ অনুবাদকরণের অনুমতি হইবে, অনুবাদক আদৌ তাহার কিয়দংশ অনুবাদ করিয়া সমাজে সমর্পণ করিবেন। সমাজ তাহার রচনার পারিপাট্য নিরূপণার্থে তাহা শ্রীযুক্ত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও পাদরি জে রবিনসন্ সাহেবকে সমর্পণ করতঃ তাঁহাদের অভিপ্রায় লইবেন।”