পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ

ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি এইগুলির শ্রীবৃদ্ধিসাধনের জন্য বহু চেষ্টা করিয়াছিলেন। এই-সকল পাঠশালার জন্য শিক্ষক নির্বাচনের ভার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সেক্রেটারী মার্শেল ও বিদ্যাসাগরের উপর ছিল।

 কিন্তু প্রয়োজনীয় পাঠ্যপুস্তক, শিক্ষক এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রভৃতির অভাবে হার্ডিঞ্জের প্রচেষ্টা আশানুরূপ সাফল্য লাভ করে নাই। চারি বৎসর যাইতে-না-যাইতেই পাঠশালাগুলির তত্ত্বাবধায়ক—বোর্ড অফ রেভিনিউ মন্তব্য প্রকাশ করিলেন,—“সফলতা অসম্ভব, বাংলা পাঠাশালাগুলির আর কোনো আশা নাই।” তাহার পর হইতে সাধারণের শিক্ষার জন্য সরকার আর বিশেষ কিছু করেন নাই। সাধারণের মধ্যে শিক্ষা-বিস্তার যে এক অসম্ভব কাজ নয়, ভারতবর্ষের অপর এক প্রদেশের শাসনকর্তা সে-কথা প্রমাণ করিয়া দেখাইলেন।

 উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কতকগুলি নির্ব্বাচিত জেলায়, ছোটলাট টমাসন্ কর্ত্তৃক ব্যবস্থিত দেশীয় ভাষার শিক্ষা-প্রণালী যে অপূর্ব্ব সাফল্যলাভ করিয়াছে, ১৮৫৩ সালের প্রারম্ভে তৎসম্বন্ধীয় রিপোর্ট বড়লাটের হস্তগত হইল।[১] বঙ্গ ও বিহারে এই প্রণালী প্রবর্ত্তিত করা যে একান্ত বাঞ্ছনীয়, সেকথা কোর্ট অফ্ ডিরেক্টরদের তিনি বিশেষ করিয়া জানালেন এবং কর্ত্তৃপক্ষের আদেশ পৌঁছিবার পূর্বেই বাংলা-সরকারকে ঐ বিষয়ে মতামত জানাইতে অনুরোধ করিলেন (৪ নভেম্বর, ১৮৫৩}। একটি সুসম্বদ্ধ বাংলা শিক্ষা-প্রণালী কি উপায়ে ভাল করিয়া প্রতিষ্ঠিত এবং সুরক্ষিত করিতে পারা যায়, তৎসম্বন্ধে এক খসড়া তৈয়ারী করিবার জন্য বঙ্গীয় গভর্ন্মেণ্ট শিক্ষা-পরিষদকে লিখিলেন (১৯ নভেম্বর)। মাতৃভাষায় শিক্ষা-সম্বন্ধে আডাম সাহেবের রিপোর্ট এবং টমাসনের ব্যবস্থাকে ভিত্তিস্বরূপ করিয়া সেই খসড়া তৈয়ারী করিতে হইবে। ১৮৫৪, ৯ই সেপ্টেম্বর পরিষদ ঐ বিষয়ে সদস্যদিগের মিনিটগুলি বঙ্গীয় গভর্ন্মেণ্টকে পাঠাইলেন।


  1. Minute by Lord Dalhousie, dated 25 October, 1853.